ইন্দোনেশিয়ায় ২০২৫/২০২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রারম্ভিক শৈশব শিক্ষা সহ ১৩ বছরের বাধ্যতামূলক শিক্ষা নীতি বাস্তবায়ন

সম্পাদনা করেছেন: Olga Samsonova

ইন্দোনেশিয়ার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয় (কেমেন্ডিকডাসমেন) দেশের মানবসম্পদ উন্নয়নের কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে ৯ বছরের বাধ্যতামূলক শিক্ষা নীতিকে ১৩ বছরে উন্নীত করার প্রক্রিয়া শক্তিশালী করছে। এই কাঠামোগত পরিবর্তনে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আগে এক বছরের প্রারম্ভিক শৈশব শিক্ষা (পিএইউডি) বাধ্যতামূলক করা হবে, যা উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। এই নতুন শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয় দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন পরিকল্পনা (আরপিজেপিএন) ২০২৫-২০৪৫ এর অধীনে একটি অগ্রাধিকার এবং এটি ২০২৫/২০২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। এর বৃহত্তর লক্ষ্য হলো ২০৪৫ সালের মধ্যে ইন্দোনেশিয়াকে স্বর্ণযুগে উন্নীত করার জন্য উন্নত মানবসম্পদ তৈরি করা।

এই নীতির মূল উদ্দেশ্য হলো পাঁচ থেকে ছয় বছর বয়সী সকল শিশুর জন্য মানসম্মত পিএইউডি নিশ্চিত করা, যাতে তারা জ্ঞানীয়, সামাজিক এবং আবেগিক প্রস্তুতি অর্জন করতে পারে। জাকার্তায় একটি ব্রিন (BRIN) অনুষ্ঠানে, ডিআরএ. মারেতা ওয়াহ্যুনি, এম.পিডি., প্রারম্ভিক শৈশব বিকাশকে ভবিষ্যতের সাফল্যের জন্য অপরিহার্য বিনিয়োগ হিসেবে উল্লেখ করেন। এই দাবির সমর্থনে, কেমেন্ডিকবুদরিস্টেক-এর ২০২১ সালের গবেষণায় দেখা গেছে যে পিএইউডি অংশগ্রহণকারী শিশুদের মধ্যে ৭৮% শিশু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য প্রস্তুত ছিল, যেখানে অংশগ্রহণ না করা শিশুদের ক্ষেত্রে এই হার ছিল ৪৫%। এছাড়াও, ইউএনআইসিইএফ/ব্যাপেনাস ২০২০ সালের তথ্য অনুযায়ী, গ্রামীণ অঞ্চলের পিএইউডি শিশুদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য ১.৮ গুণ বেশি প্রস্তুত ছিল। ব্রিন প্রতিনিধিরা চরিত্র গঠন এবং মৌলিক চিন্তাভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

তবে, ২০২৫ সালের বাস্তবায়নের পথে অবকাঠামোগত ঘাটতি এবং শিক্ষক যোগ্যতার ক্ষেত্রে বৈষম্যসহ বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান। অনুসন্ধানে জানা গেছে যে দেশের ১৭,৮০৩টি গ্রামে পিএইউডি সুবিধার অভাব রয়েছে, যা শিক্ষার সমতা অর্জনের পথে বাধা সৃষ্টি করছে। শিক্ষক যোগ্যতার ক্ষেত্রে, প্রায় ৯৮ হাজার আনুষ্ঠানিক পিএইউডি শিক্ষকের বাধ্যতামূলক স্নাতক (এস১/ডি৪) ডিগ্রি নেই। এই ঘাটতি পূরণের জন্য সরকার মেরডেকা পাঠ্যক্রম বাস্তবায়ন প্রশিক্ষণের মতো বিভিন্ন কর্মসূচি চালু করেছে, যা শিক্ষকদের সৃজনশীলতা ও নমনীয়তা বৃদ্ধিতে সহায়ক।

ইন্দোনেশিয়ার শিক্ষাব্যবস্থার ধারাবাহিক বিবর্তনের অংশ হিসেবে এই ১৩ বছরের বাধ্যতামূলক শিক্ষার ধারণাটি শুরু হয়েছিল ১৯৮৪ সালে প্রেসিডেন্ট সুহার্তোর ছয় বছরের বাধ্যতামূলক শিক্ষার ঘোষণার মাধ্যমে। বর্তমানে, এই নীতিটি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) ৪.২ এর সাথেও সংযুক্ত। যদিও নীতিগতভাবে পিএইউডি গুরুত্বপূর্ণ, অনেক অভিভাবক এটিকে কেবল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির আগের যত্নের স্থান হিসেবে দেখেন, যা শিশুদের সর্বোত্তম অংশগ্রহণকে বাধাগ্রস্ত করে। এই সমস্যা মোকাবিলায় ইন্দোনেশিয়া স্মার্ট প্রোগ্রাম (পিআইপি) এর আওতায় পিএইউডি শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা থাকলেও, ২০২৬ সালের শিক্ষা বাজেটে এর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি, যা বাস্তবায়নকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।

সরকারের কৌশলগত পরিকল্পনা, যেমন আরপিজেপিএন ২০২৫-২০৪৫, উচ্চ শিক্ষা অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং বিশেষত বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত (এসটিইএম) ক্ষেত্রে স্নাতকদের মানোন্নয়নের লক্ষ্য রাখে। প্রারম্ভিক শৈশব শিক্ষার ক্ষেত্রে বিনিয়োগের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে, কারণ গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রতি ১ ডলার বিনিয়োগে ৭ ডলার পর্যন্ত প্রত্যাবর্তন হতে পারে। এই নীতি বাস্তবায়নের সাফল্য সরকার, বেসরকারি খাত এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে শক্তিশালী সহযোগিতার ওপর নির্ভর করবে, বিশেষত পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ এবং শিক্ষকের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে। সামগ্রিকভাবে, এই ১৩ বছরের বাধ্যতামূলক শিক্ষা ইন্দোনেশিয়ার জন্য সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতামূলক মানবসম্পদ তৈরির একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।

13 দৃশ্য

উৎসসমূহ

  • detikedu

  • Kemendikdasmen Ungkap Riset Anak PAUD Lebih Siap Masuk SD Dibanding NonPAUD

  • 4 Tantangan Wajib Belajar 13 Tahun: Kurangnya Sekolah-Rendahnya Kualitas Guru

  • Ini Strategi Kemendikdasmen Tentang Wajib Belajar 13 Tahun - RRI

  • Tri Mumpuni Tegaskan Pentingnya Pendidikan Aliran Pemikiran Sejak Usia Dini untuk Bentuk Generasi Berkualitas - Pantau

  • Pemerintah Dorong Wajib Belajar 13 Tahun dan Pemenuhan Kualifikasi Guru PAUD-SD

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।