ইউক্রেনের জন্য ন্যাটো-শৈলীর নিরাপত্তা গ্যারান্টি এবং কংগ্রেসনাল ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন
সম্পাদনা করেছেন: gaya ❤️ one
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ইউক্রেনকে ন্যাটো চুক্তির পঞ্চম অনুচ্ছেদের আদলে আইনত বাধ্যতামূলক নিরাপত্তা গ্যারান্টি প্রদানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, যার কার্যকরতার জন্য মার্কিন কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন হবে। এই প্রস্তাবটি একটি বৃহত্তর শান্তি কাঠামোর অংশ, যা আঞ্চলিক ছাড়ের শর্ত সাপেক্ষে তৈরি করা হয়েছে বলে ১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৫ তারিখে জানা গেছে। ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তারা অ্যাক্সিওসকে জানিয়েছেন যে এই গ্যারান্টিগুলিকে কেবল একটি "খালি চেক" না রেখে যথেষ্ট শক্তিশালী করার লক্ষ্য রাখা হয়েছে।
প্রস্তাবিত শান্তি কাঠামোটি তিনটি পৃথক চুক্তিতে বিভক্ত: একটি শান্তি স্থাপন, একটি নিরাপত্তা গ্যারান্টি প্রদান এবং অন্যটি যুদ্ধ-পরবর্তী পুনর্গঠন সম্পর্কিত। বর্তমান প্রস্তাবনা অনুযায়ী, যুদ্ধ শেষ হলে ইউক্রেন তার ভূখণ্ডের প্রায় ৮০ শতাংশ সার্বভৌমত্ব বজায় রাখবে এবং ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা লাভ করবে, পাশাপাশি একটি উল্লেখযোগ্য সমৃদ্ধি প্যাকেজও পাবে। এই পরিকল্পনার মূল জটিলতা হলো আঞ্চলিক ছাড়, বিশেষত ডনবাস অঞ্চলে, যেখানে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব বজায় রাখার শর্তে একটি সামরিকমুক্ত অঞ্চল তৈরির প্রস্তাব রয়েছে।
এই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে, মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনারের ১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৫ তারিখে বার্লিনে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং শীর্ষস্থানীয় ইউরোপীয় নেতাদের সাথে সাক্ষাৎ করার কথা ছিল। এই বৈঠকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এবং জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্জের উপস্থিত থাকার কথা ছিল। এই কূটনৈতিক তৎপরতা ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি বা শান্তি চুক্তির প্রচেষ্টার অংশ, যা নভেম্বরে ইউক্রেনের উপর মস্কোর অনুকূলে থাকা একটি ২৮-দফা শান্তি পরিকল্পনা চাপিয়ে দেওয়ার পর তীব্র হয়েছে।
ইউরোপীয় মিত্রদের পক্ষ থেকে জেলেনস্কিকে সতর্ক করা হয়েছে যে, যে অঞ্চলগুলি এখনও রুশ বাহিনীর দখলে যায়নি, সেই অঞ্চলের ছাড় দিয়ে কোনো চুক্তিতে তাড়াহুড়ো করা উচিত নয়। অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি পূর্বে জানিয়েছিলেন যে ডনবাসের কোনো অংশ ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি ইউক্রেনের জাতীয় আইন ও আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী, এবং যেকোনো আঞ্চলিক ছাড়ের বিষয়ে জাতীয় গণভোটের প্রয়োজন হতে পারে।
এই আলোচনার পটভূমিতেই, ১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৫ তারিখে কিয়েভে ব্যাপক আকারে জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা চালানো হয়, যার ফলে হাজার হাজার মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে যে রাশিয়া প্রায় ৫০০ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে এই সম্মিলিত হামলা চালিয়েছিল, যার প্রধান লক্ষ্য ছিল দক্ষিণাঞ্চল এবং ওডেসা অঞ্চল। এই হামলার ফলে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা শান্তি আলোচনার জন্য বিদ্যমান চাপকে আরও বাড়িয়ে দেয়। এই পরিস্থিতিতে, ইউক্রেনের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, জাপোরিঝঝিয়া নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টও সাময়িকভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ হারায়, যদিও পরে তা পুনরুদ্ধার করা হয়।
4 দৃশ্য
উৎসসমূহ
Deutsche Welle
Euromaidan Press
The New Voice of Ukraine
Apa.az
Polskie Radio
AFP
এই বিষয়ে আরও খবর পড়ুন:
আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?
আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।
