মার্কিন অ্যাকাডেমির প্রধান বৈজ্ঞানিক অগ্রাধিকার: মঙ্গল অভিযানের জন্য প্রাণের সন্ধান

সম্পাদনা করেছেন: Uliana S.

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড মেডিসিন সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি প্রকাশ করেছে। এটি ছিল মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত 'মঙ্গল গ্রহের মানব অভিযান সংক্রান্ত বৈজ্ঞানিক কৌশল' শীর্ষক একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন। এই ২৪০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনটি নাসার নির্দেশনায় প্রস্তুত করা হয়েছে এবং এটি ২০৩০-এর দশকে নির্ধারিত লাল গ্রহে প্রথম মানববাহী অভিযানের জন্য মূল বৈজ্ঞানিক লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছে।

এই মিশনের চালিকাশক্তি হিসেবে যে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তটি উঠে এসেছে, তা হলো প্রাণের অতীত বা বর্তমান অস্তিত্বের চিহ্ন অনুসন্ধান করা এবং গবেষণার ক্ষেত্রে প্রিবায়োটিক রসায়নের মূল্যায়ন করা। এই গুরুত্বপূর্ণ নথির সহ-সভাপতি ছিলেন ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলির লিন্ডা এলকিন্স-ট্যান্টন এবং ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির (এমআইটি) ডোভা নিউম্যান। তাঁদের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি মোট এগারোটি প্রধান বৈজ্ঞানিক সুপারিশ প্রদান করেছে। এই সুপারিশগুলির লক্ষ্য হলো প্রস্তাবিত চারটি অভিযানের অধীনে প্রথম তিনটি মানব অবতরণের মাধ্যমে বৈজ্ঞানিক ফলাফলকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া।

সবচেয়ে অনুকূল যে অভিযান কাঠামোটি প্রস্তাব করা হয়েছে, তাতে একটি তিন-পর্যায়ের বিন্যাস রয়েছে। প্রথমে থাকবে ৩০ সল (মঙ্গল দিনের পরিমাপ) ব্যাপী একটি সংক্ষিপ্ত মানব মিশন। এর পরপরই একটি মানববিহীন কার্গো ফ্লাইট পাঠানো হবে। সবশেষে, মূল অভিযানে নভোচারীরা ৩০০ সল অবস্থান করবেন। গবেষণার কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে প্রতিবেদনটিতে মঙ্গল পৃষ্ঠে একটি স্থায়ী বৈজ্ঞানিক গবেষণাগার স্থাপন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, প্রতিটি মানববাহী মিশনের সঙ্গেই নমুনা পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার আবশ্যকতা রাখা হয়েছে। রোবট, মানুষ এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সমন্বিত প্রচেষ্টার সুষ্ঠু সমন্বয়ের জন্য একটি নিয়মিত 'মানব ও এজেন্ট দলবদ্ধতার শীর্ষ সম্মেলন' আয়োজনের প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে।

অবতরণের স্থান নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হয়েছে। এমন স্থানকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে যেখানে নিম্ন থেকে মধ্য অক্ষাংশ রয়েছে, ভূতাত্ত্বিক বৈচিত্র্য বিদ্যমান এবং পৃষ্ঠের কাছাকাছি জলের বরফ পাওয়া সম্ভব। প্রাণের সন্ধানে নিবেদিত তৃতীয় স্তরের অভিযানটিতে এমন সম্ভাবনাও বিবেচনা করা হয়েছে যেখানে ২ থেকে ৫ কিলোমিটার গভীরতায় খনন করা যেতে পারে, কারণ সেখানে তরল জলের অস্তিত্ব থাকতে পারে। বৈজ্ঞানিক লক্ষ্যমাত্রার পাশাপাশি, প্রতিবেদনটি গ্রহীয় সুরক্ষার দিকটিও স্পর্শ করেছে। এটি নাসাকে নির্দেশ দিয়েছে যেন তারা নির্দেশিকা বিবর্তনে সহযোগিতা চালিয়ে যায়, যাতে নভোচারীরা গ্রহের নিরাপত্তার প্রতি কোনো ঝুঁকি না বাড়িয়ে সম্ভাব্য জীবনধারণ উপযোগী অঞ্চলগুলিতে অনুসন্ধান চালাতে পারেন।

এই নথিটি ২০৩০-এর দশকে মানুষকে মঙ্গল গ্রহে পাঠানোর নাসার পরিকল্পনার জন্য বৈজ্ঞানিক এজেন্ডা নির্ধারণ করে দিয়েছে। এটি নিশ্চিত করে যে বহির্জাগতিক প্রাণের অনুসন্ধান এখনও মহাকাশ গবেষণার মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। এই সুপারিশগুলির সফল বাস্তবায়ন নির্ভর করবে আর্টেমিস কর্মসূচির মাধ্যমে অর্জিত অভিজ্ঞতার ওপর, যা চাঁদে মানুষকে ফিরিয়ে আনার জন্য একটি প্রশিক্ষণ ক্ষেত্র হিসেবে কাজ করবে। নাসার বর্তমান মঙ্গল নমুনা প্রত্যাবর্তন (Mars Sample Return) কর্মসূচির বিকল্প হিসেবে যে নমুনা প্রত্যাবর্তনের সময়সীমা চাওয়া হচ্ছে, তা ২০৩৫ বা ২০৩৯ সালের দিকে নির্ধারিত হতে পারে।

33 দৃশ্য

উৎসসমূহ

  • Olhar Digital - O futuro passa primeiro aqui

  • Folha de Curitiba

  • CNN Brasil

  • CPG Click Petróleo e Gás

  • Ciencia

  • Agência Brasil

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।