২০২৫ সালের মধ্যে শিশুদের ডিজিটাল নিরাপত্তা: প্রাক-ডিজিটাল দক্ষতার গুরুত্ব

সম্পাদনা করেছেন: Olga Samsonova

২০২৫ সাল নাগাদ জটিল ডিজিটাল বিশ্বে শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে শিক্ষাব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হচ্ছে, যেখানে প্রাক-ডিজিটাল দক্ষতার ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। ইন্দোনেশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় (LPT UI) এর ফলিত মনোবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে কর্মরত শিশু ও কিশোর মনোবিজ্ঞানী ভেরা ইতাবিলিয়ানা হাদিউইদজোজো এই শিক্ষাগত স্তরগুলির রূপরেখা দিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, শিশুদের ডিজিটাল জগতে সুস্থভাবে অংশগ্রহণের জন্য প্রথম পাঁচ বছর হলো ভিত্তি তৈরির সংকটময় সময়, যেখানে আবেগ নিয়ন্ত্রণ এবং আত্ম-নিয়ন্ত্রণের মতো মৌলিক ক্ষমতাগুলি আয়ত্ত করা অপরিহার্য।

এই প্রাথমিক পাঁচ বছরে শিশুদের মধ্যে যে জীবন দক্ষতাগুলি গড়ে তোলা প্রয়োজন, তা ডিজিটাল ক্ষেত্রের বাইরেও প্রযোজ্য, যেমন নিজেদের আবেগ পরিচালনা করা এবং সেগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করা। মনোবিজ্ঞানী ভেরা ইতাবিলিয়ানা জোর দিয়ে বলেছেন যে, এই সূচনা পর্যায়ে গ্যাজেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে পিতামাতার আচরণই শিশুদের দৈনন্দিন অনুকরণের প্রধান মডেল হিসেবে কাজ করে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, চার বছর বয়সে অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম থাকলে ছয় বছর বয়সে আবেগের বোধগম্যতা হ্রাস পেতে পারে, যা এই প্রাথমিক হস্তক্ষেপের গুরুত্বকে তুলে ধরে। প্রকৃতপক্ষে, পিতামাতার সংবেদনশীল এবং দৃঢ় প্রতিক্রিয়া শিশুদের মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে, যা সুস্থ বিকাশের জন্য অপরিহার্য। মুখোমুখি মিথস্ক্রিয়া এবং পিতামাতার বাস্তব জীবনের উদাহরণগুলির মাধ্যমে যে শক্তিশালী আচরণগত ও আবেগিক ভিত্তি তৈরি হয়, তা শিশুর প্রাথমিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে।

ডিজিটাল প্রযুক্তি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আরও বেশি সংহত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে, শৈশবের ডিজিটাল সংস্পর্শের নেতিবাচক পরিণতি এড়াতে এই মৌলিক সামাজিক-আবেগিক সক্ষমতাগুলির ওপর গুরুত্বারোপ করা ক্রমশ অপরিহার্য হয়ে উঠছে। ডিজিটাল সাক্ষরতা কেবল প্রযুক্তিগত জ্ঞান নয়, বরং এটি এমন দক্ষতা, জ্ঞান ও মনোভাব যা শিশুদের ডিজিটাল জগতে নিরাপদ ও ক্ষমতাপ্রাপ্ত হতে সাহায্য করে, যেমনটি ইউনিসেফের কাঠামোতে উল্লেখ করা হয়েছে। শিশুদের ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য, বিশেষ করে ২০২৫ সালের মতো দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তিগত পরিস্থিতিতে, প্রথাগত সাক্ষরতার মতোই ডিজিটাল সাক্ষরতা মৌলিক হয়ে উঠবে। এই প্রেক্ষাপটে, পিতামাতাদের ডিজিটাল সাক্ষরতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে তারা শিশুদের সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারের ওপর উন্নত তদারকি করতে পারে এবং সাইবার জগতের অগ্রগতি সম্পর্কে অবগত থাকতে পারে।

উপরন্তু, শিশুদের আবেগিক বিকাশের বিভিন্ন পর্যায় রয়েছে; যেমন তিন থেকে পাঁচ বছর বয়সে শিশুরা ভাগ করে নেওয়া, শোনা এবং একসাথে খেলার মতো নতুন সামাজিক পরিবেশে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয় এবং তাদের নিজস্বভাবে আবেগ পরিচালনার জন্য নতুন কৌশল তৈরি করতে হয়। এই মৌলিক দক্ষতাগুলি অর্জিত হলে, শিশুরা অনলাইনে বিচক্ষণতার সাথে কাজ করতে সক্ষম হবে, যা তাদের ভবিষ্যতের জন্য অপরিহার্য। ডিজিটাল জগতে শিশুদের নিরাপদ রাখার জন্য নীতিগত পদক্ষেপও নেওয়া হচ্ছে; অনেক ওইসিডির দেশগুলিতে শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য সমন্বিত জাতীয় আইন ও নীতি তৈরি হচ্ছে, যেখানে শিশুদের কল্যাণকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

স্ক্রিন গার্ডিয়ান্সের মতো সংস্থাগুলিও ফল সেমিস্টারে ২০২৫ সালে একটি ১২-১৪ সপ্তাহের পাঠ্যক্রম চালু করছে, যা শিশু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহযোগিতায় তৈরি, যেখানে আবেগিক সচেতনতা এবং সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এই সম্মিলিত প্রচেষ্টাগুলি নিশ্চিত করে যে, শিশুদের ডিজিটাল পরিবেশে সুরক্ষার দায়িত্ব কেবল তাদের বা তাদের অভিভাবকদের ওপর বর্তাবে না, বরং প্রযুক্তি সংস্থাগুলিরও প্ল্যাটফর্মগুলিকে শিশুদের কল্যাণের জন্য ডিজাইন করতে হবে, যা 'নিরাপত্তা দ্বারা নকশা' (safety by design) নীতি নামে পরিচিত। এই সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং সামগ্রিক কল্যাণের জন্য অপরিহার্য।

9 দৃশ্য

উৎসসমূহ

  • IDN Times

  • Republika Online

  • UI Magazine

  • Okadoc

  • Sentra Tumbuh Kembang Anak

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।