১৯৪৪ সালের চুক্তি মেনে জলবন্টন বিতর্ক মেটাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো

সম্পাদনা করেছেন: Svetlana Velgush

২০২৫ সালের ১২ই ডিসেম্বর, মেক্সিকো এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারগুলি একটি গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতায় পৌঁছেছে। এই চুক্তিটি মূলত ১৯৪৪ সালের জলচুক্তিকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে গৃহীত হয়। এই সমঝোতার ফলে জল সরবরাহের দাবিতে সৃষ্ট কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক উত্তেজনা প্রশমিত হয়, যা পূর্বে শুল্ক আরোপের হুমকির জন্ম দিয়েছিল।

১৯৪৪ সালের এই চুক্তিটি কলোরাডো, রিও গ্র্যান্ডে এবং টিজুয়ানা নদীর জল বণ্টনের ভিত্তি স্থাপন করে এবং এটি দুই দেশের সহযোগিতার মূল স্তম্ভ। তবে, দীর্ঘস্থায়ী খরা পরিস্থিতির কারণে এর বাস্তবায়ন মাঝে মাঝেই কঠিন হয়ে পড়ে। সাম্প্রতিক সংকটের মূল কারণ ছিল তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্য, যেখানে তিনি মেক্সিকোকে তাদের বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত করেন। ট্রাম্পের দাবি ছিল, পূর্ববর্তী পাঁচ বছরের চক্র শেষে মেক্সিকো যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কমপক্ষে ৮০০,০০০ একর-ফুট জল পাওনা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, আন্তর্জাতিক সীমান্ত ও জল কমিশন (IBWC)-এর প্রযুক্তিগত আলোচনার গণ্ডি পেরিয়ে বাণিজ্য শুল্ক আরোপের হুমকি দেওয়া হয়েছিল, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছিল।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে মেক্সিকো সরকার প্রতিশ্রুতি দেয় যে তারা অবিলম্বে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ২৪৯.১৬৩ মিলিয়ন ঘনমিটার জল ছেড়ে দেবে। এই পরিমাণটি আনুমানিক ২০২,০০০ একর-ফুট জলের সমান। এই সরবরাহ শুরু হওয়ার কথা ছিল ২০১৫ সালের ১৫ই ডিসেম্বর থেকে। এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় দেখা যায় যে, ২০২২ সালের ২৪শে অক্টোবর পর্যন্ত মেক্সিকো বর্তমান চক্রের জন্য প্রয়োজনীয় জলের মাত্র ৫০.৬ শতাংশ সরবরাহ করেছে। মেক্সিকোর পক্ষ থেকে এক যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয় যে, তারা চুক্তির কোনো লঙ্ঘন করেনি এবং পূর্বে যে অতিরিক্ত জল সরবরাহ করা হয়েছিল, তা অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে কোনো বাধা সৃষ্টি করেনি।

আলোচিত চুক্তির একটি প্রধান দিক হলো পূর্ববর্তী জলচক্রের (যা অক্টোবর ২০২৫-এ শেষ হয়েছিল) বকেয়া ঘাটতি মেটানো। ১৯৪৪ সালের চুক্তি অনুসারে, মেক্সিকোকে প্রতি পাঁচ বছরের চক্রে গড়ে কমপক্ষে ৩৫০,০০০ একর-ফুট জল সরবরাহ করতে হয়, অর্থাৎ পুরো মেয়াদে মোট ১.৭৫ মিলিয়ন একর-ফুট। অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রতি বছর কলোরাডো নদী থেকে মেক্সিকোকে ১.৫ মিলিয়ন একর-ফুট জল দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ। উভয় পক্ষই একমত হয়েছে যে, ঘাটতি ব্যবস্থাপনা এবং দ্বিপাক্ষিক সমন্বয় উন্নত করার জন্য একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা আগামী ২০২৬ সালের ৩১শে জানুয়ারির মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে।

জল সরবরাহে বিলম্বের কারণে মার্কিন পক্ষকে যথেষ্ট ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। অনুমান করা হয়, টেক্সাসের কৃষকদের বার্ষিক অর্থনৈতিক ক্ষতি প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। এছাড়াও, ২০২৪ সালের শুরুর দিকে রিও গ্র্যান্ডে-তে অবস্থিত একমাত্র চিনি কারখানাটি জলের অভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। মার্কিন কৃষি সচিব ব্রুক রোলিন্স উল্লেখ করেন যে, গত এক বছরে মেক্সিকো পূর্ববর্তী চার বছরের সম্মিলিত পরিমাণের চেয়েও বেশি জল সরবরাহ করেছে, যা আস্থার পুনরুদ্ধারে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। এই বিরোধের সফল সমাধান বাণিজ্য সম্পর্ক আরও খারাপ হওয়ার সম্ভাবনাকে সফলভাবে এড়িয়ে যেতে সাহায্য করেছে।

24 দৃশ্য

উৎসসমূহ

  • RT en Español

  • López-Dóriga Digital

  • El Diario de Hoy

  • El Soberano

  • Secretaría de Relaciones Exteriores - Gob MX

  • El Heraldo de Chihuahua

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।

১৯৪৪ সালের চুক্তি মেনে জলবন্টন বিতর্ক মেটা... | Gaya One