রিমোট ওয়ার্ক: কর্মজীবন ও ব্যক্তিগত জীবনে ভারসাম্য আনয়নে সহায়ক
সম্পাদনা করেছেন: Tatyana Hurynovich
দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত একটি চার বছরের গবেষণা নিশ্চিত করেছে যে রিমোট ওয়ার্ক বা দূরবর্তী কাজের ব্যবস্থা কর্মীদের কর্মজীবন এবং ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং সামগ্রিক সুস্থতা বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্যভাবে সহায়ক। এই গবেষণাটি বিশ্বজুড়ে রিমোট ওয়ার্কের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে, যা কর্মীদের জীবনযাত্রায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা বাড়ি থেকে কাজ করেন তারা যাতায়াতের সময় এবং অর্থ সাশ্রয় করতে পারেন। এই সাশ্রয় করা সময় তারা ব্যায়াম, স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ, এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম সহ ব্যক্তিগত কার্যকলাপের জন্য ব্যবহার করতে পারেন। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরা জানিয়েছেন যে, তারা গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৩০ মিনিট বেশি বিশ্রাম পান, যা তাদের কর্মক্ষমতা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সহায়ক। এছাড়াও, বাড়ি থেকে কাজ করার ফলে অনেকেই বেশি করে ফল ও সবজি খাচ্ছেন এবং বাড়িতে তৈরি খাবারের প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন, যা তাদের স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রায় অবদান রাখছে।
গবেষণার ফলাফলগুলি আরও ইঙ্গিত দেয় যে, যখন রিমোট ওয়ার্ক কর্মীদের ইচ্ছানুযায়ী হয়, তখন এটি তাদের কাজের প্রতি আগ্রহ এবং কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি কর্মীদের মধ্যে এক ধরণের স্বাধীনতা এবং নিয়ন্ত্রণের অনুভূতি তৈরি করে, যা তাদের আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী করে তোলে। এই গবেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, এটি দেখিয়েছে যে রিমোট ওয়ার্ক কেবল কর্মীদের ব্যক্তিগত জীবনেই ইতিবাচক প্রভাব ফেলে না, বরং এটি প্রতিষ্ঠানের জন্যও লাভজনক হতে পারে। কর্মীরা যখন সুখী এবং সুস্থ থাকেন, তখন তারা কাজে বেশি মনোযোগী হন, যা সামগ্রিকভাবে প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করে।
গবেষণায় আরও উঠে এসেছে যে, কর্মীরা তাদের কর্মজীবনের ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং ব্যক্তিগত প্রয়োজন মেটাতে রিমোট ওয়ার্কের জন্য বেতন কমাতেও ইচ্ছুক। প্রায় ৪৫% কর্মী রিমোট ওয়ার্কের সুবিধার জন্য তাদের বার্ষিক বেতনের একটি অংশ ছাড়তে রাজি আছেন। বিশেষ করে নারীরা, যারা প্রায়শই পরিবার এবং কর্মজীবনের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন, তারা রিমোট ওয়ার্কের প্রতি বেশি আকৃষ্ট। এটি বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, কর্মীরা তাদের কাজের পরিবেশকে নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী সাজাতে পারেন, যা তাদের মানসিক শান্তি এবং উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সহায়ক।
এই গবেষণা আধুনিক কর্মসংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেছে। এটি প্রমাণ করে যে, নমনীয় কর্ম ব্যবস্থা কর্মীদের সুস্থতা এবং কর্মজীবনের ভারসাম্য উন্নত করতে পারে, যা শেষ পর্যন্ত একটি উৎপাদনশীল এবং সুখী কর্মক্ষেত্র তৈরি করে। রিমোট ওয়ার্ক শুধুমাত্র একটি কাজের পদ্ধতি নয়, এটি কর্মীদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের একটি শক্তিশালী হাতিয়ার।
উৎসসমূহ
Montevideo Portal / Montevideo COMM
University of South Australia - Vacation Research Scholarships
এই বিষয়ে আরও খবর পড়ুন:
আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?
আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।
