ইন্দোনেশিয়া ও ব্রাজিলের বিরল উদ্ভিদের জিনোমিক গবেষণা: টিকে থাকার প্রমাণ
সম্পাদনা করেছেন: An goldy
আন্তর্জাতিক গবেষকদের একটি দল ২০২৫ সালের শেষের দিকে ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম সুমাত্রার সিজুঞ্জুং এলাকায় অত্যন্ত দুর্লভ পরজীবী উদ্ভিদ রাফলেশিয়া হাসেলটি (*Rafflesia hasseltii*) এর উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে। এই আবিষ্কারটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ফুলটি আনুষ্ঠানিকভাবে সংরক্ষিত এলাকার বাইরে, স্থানীয় সম্প্রদায়ের ব্যবস্থাপনায় থাকা বনাঞ্চলে সগৌরবে বেড়ে উঠতে দেখা গেছে। 'দ্য ফার্স্ট রিজিওনাল প্যান-ফাইলোজেনি ফর রাফলেশিয়া' প্রকল্পের অংশ হিসেবে এই গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে, যেখানে ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় গবেষণা ও উদ্ভাবন সংস্থা (BRIN) এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় বোটানিক গার্ডেন ও আর্বোরেটামের মধ্যে সহযোগিতা স্থাপিত হয়েছে।
Cycnoches pentadactylon Lindl
অক্সফোর্ডের ডঃ ক্রিস থোরোগুড এবং বিআরআইএন-এর জোকো রিধো ভিটোনোর নেতৃত্বে বিজ্ঞানীরা একটি অভিযানে অংশ নেন। এই অভিযানটি বেঙ্কুলু থেকে প্রায় ২০ ঘণ্টার পথ অতিক্রম করে এবং বাঘের আবাসস্থল হিসেবে চিহ্নিত দুর্গম বনাঞ্চলের মধ্য দিয়ে রাতের অন্ধকারে অনুসন্ধান অন্তর্ভুক্ত করে। বৈজ্ঞানিক কাজটি রাফলেশিয়ার জিনোমকে বিস্তারিতভাবে মানচিত্রায়িত করার জন্য হোল-জিনোম সিকোয়েন্সিং (WGS) প্রযুক্তির ওপর জোর দিয়েছে। এটি পূর্ববর্তী গবেষণার তুলনায় একটি বড় অগ্রগতি, যেখানে কেবল ৫০০ থেকে ১৫০০ বেস পেয়ারের ডিএনএ-এর ক্ষুদ্র অংশ বিশ্লেষণ করা হয়েছিল। এই গভীর বিশ্লেষণের লক্ষ্য হলো কেবল সম্ভাব্য নতুন প্রজাতি শনাক্ত করাই নয়, বরং সংরক্ষণের জন্য বিজ্ঞানসম্মত জাতীয় কৌশল প্রণয়ন করা।
এই আবিষ্কার ইন্দোনেশিয়াকে বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ রাফলেশিয়া বৈচিত্র্যের অঞ্চল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য করে, যা ফিলিপাইনের সাথে তুলনীয়, যেখানে বর্তমানে ১৬টি পরিচিত প্রজাতি রয়েছে। বিআরআইএন দল এই বহু-বার্ষিক প্রকল্পের অংশ হিসেবে, যা ২০২৫ সালের শুরুতে শুরু হয়েছিল, আরও ডিএনএ বিশ্লেষণের জন্য ১৩টি নমুনা সংগ্রহ করেছে। বিশেষভাবে লক্ষণীয় যে, অনেক রাফলেশিয়া প্রজাতি সংরক্ষিত অঞ্চলের বাইরে, বিশেষত কফি ও পাম বাগানে জন্মায়, যা স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে সংরক্ষণ উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তাকে আরও জোরালোভাবে তুলে ধরে।
ইন্দোনেশিয়ার এই আবিষ্কারের পাশাপাশি ব্রাজিলে একটি সমান গুরুত্বপূর্ণ নিশ্চয়তা পাওয়া গেছে। মিনাস গেরাইস রাজ্যের উবা শহরের সেররা দা মোয়েগা মিউনিসিপ্যাল পার্কে মারাত্মকভাবে বিপন্ন অর্কিড *Cycnoches pentadactylon Lindl.*, যা 'হাঁসের গলা' অর্কিড নামে পরিচিত, আবিষ্কৃত হয়েছে। রাজ্যে এই প্রজাতির সন্ধান পাওয়া এটিই প্রথম নথিভুক্ত ঘটনা, যা এই পার্কটির ব্যতিক্রমী পরিবেশগত মূল্যকে নির্দেশ করে। ফেডারেল ইউনিভার্সিটি অফ ভিসোসার প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের দ্বারা ২০২১ সালে প্রতিষ্ঠিত অলাভজনক সংস্থা ProBiodiversa Brasil-এর সাথে সহযোগিতাকারী গবেষকরা প্রজনন নমুনা সংগ্রহের জন্য ২০২৬ সালের শুরুতে পরবর্তী অভিযানের পরিকল্পনা করছেন।
রাফলেশিয়া হাসেলটি, যাকে স্থানীয়রা মাঝে মাঝে 'বাঘের মুখের মাশরুম' বলে ডাকে, এবং ব্রাজিলীয় অর্কিড—উভয় বিরল প্রজাতির টিকে থাকা—এই দুটি বাস্তুতন্ত্রেই সংরক্ষণ উদ্যোগকে জোরালো সমর্থন করার জরুরি প্রয়োজনীয়তাকে স্পষ্ট করে তোলে। এশিয়া ও দক্ষিণ আমেরিকার প্রকল্পগুলির সাফল্য নির্ভর করে বৈজ্ঞানিক মহল এবং বনাঞ্চলের কাছাকাছি বসবাসকারী সম্প্রদায়ের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী অংশীদারিত্বের ওপর। বিশেষত যখন গবেষণা কঠিন হয়ে ওঠে, কারণ রাফলেশিয়ার ফুল মাত্র কয়েক দিন স্থায়ী হয় এবং এর আবাসস্থল প্রায়শই দুর্গম হয়।
উৎসসমূহ
Media Indonesia - News & Views -
globo.com
BRIN Ungkap Temuan Baru Rafflesia Hasseltii, Indonesia Makin Dominan
BRIN Ungkap Temuan Baru Rafflesia Hasseltii, Indonesia Makin Dominan – Bicara Indonesia
ANTARA News
SerayuNews.com
Radar Banyuwangi
ProBiodiversa Brasil
Líder Notícias
Prefeitura de Ubá
ProBiodiversa Brasil
Governo do Estado de Minas Gerais
এই বিষয়ে আরও খবর পড়ুন:
আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?
আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।
