ফেডের সুদের হার কমানোর প্রত্যাশা এবং দুর্বল ডলারের প্রভাবে সোনার দামে রেকর্ড উচ্চতা

সম্পাদনা করেছেন: Svetlana Velgush

মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর প্রত্যাশা এবং ডলারের দুর্বলতার কারণে বিশ্ববাজারে সোনার দাম নতুন রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটি (FOMC) ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদের হার কমাতে পারে, যা সোনার মতো নিরাপদ বিনিয়োগের প্রতি আগ্রহ বাড়িয়েছে। সুদের হার কমলে বন্ড বা সেভিংস অ্যাকাউন্টের মতো অন্যান্য বিনিয়োগের আকর্ষণ কমে যায়, ফলে সোনা আরও লাভজনক বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হয়। এই পরিস্থিতি বিনিয়োগকারীদের সোনার দিকে আকৃষ্ট করছে, যা দাম বৃদ্ধিতে সহায়ক হচ্ছে।

অন্যদিকে, মার্কিন ডলারের দুর্বলতা সোনার দামের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। সাধারণত, যখন ডলার দুর্বল হয়, তখন ডলার-ভিত্তিক সম্পদ, যেমন সোনা, অন্যান্য মুদ্রার তুলনায় সস্তা হয়ে যায়। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার চাহিদা বৃদ্ধি পায় এবং দামও বাড়ে। এই প্রবণতাটি পূর্বেও দেখা গেছে, যেমন ২০০৮ সালের আর্থিক সংকটের সময় ডলার দুর্বল হওয়ার সাথে সাথে সোনার দামে অভূতপূর্ব বৃদ্ধি ঘটেছিল।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের উপর সুদের হার আরও বেশি কমানোর জন্য ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করছেন। তিনি মনে করেন, সুদের হার কমালে তা অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে এবং দেশের ঋণ পরিশোধে সহায়ক হবে। যদিও ফেডারেল রিজার্ভের নীতি নির্ধারণে এই ধরনের রাজনৈতিক চাপ একটি বিতর্কিত বিষয়, তবে এটি বাজারের উপর একটি প্রভাব ফেলে। ঐতিহাসিকভাবে, যখন ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমিয়েছে, তখন সোনার দাম বেড়েছে। যেমন ২০০৮ সালের আর্থিক সংকট এবং ২০২০ সালের মহামারীর সময়ে এমনটাই দেখা গেছে। এই সময়কালে, মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে সুরক্ষা এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে সোনা একটি নির্ভরযোগ্য সম্পদ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।

সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, দুর্বল শ্রম বাজারের প্রতিবেদন এবং চলমান বাণিজ্য উত্তেজনা সোনার নিরাপদ বিনিয়োগের আবেদনকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ফেডারেল রিজার্ভের আসন্ন নীতিগত সিদ্ধান্ত এবং ডলারের ভবিষ্যৎ গতিপ্রকৃতি সোনার দামের উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে। সিএমই ফেডওয়াচ টুলের তথ্য অনুযায়ী, বাজারে ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা প্রায় নিশ্চিত। এই পরিস্থিতি সোনার বাজারে একটি ইতিবাচক ধারা বজায় রাখতে পারে, তবে বাজারের সকল অংশীজন ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের পরবর্তী মন্তব্য এবং ভবিষ্যৎ নীতি সংক্রান্ত পূর্বাভাসের দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখছে। এই ঘটনাটি বিশ্ব অর্থনীতিতে মুদ্রানীতি এবং মুদ্রার মূল্যের মধ্যেকার জটিল সম্পর্ককে আরও একবার স্পষ্ট করে তুলেছে।

উৎসসমূহ

  • Reuters

  • What the Federal Reserve is likely to do after stock selloff - CBS News

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।