২০২৫ সালের শেষ কোল্ড সুপারমুন: ডিসেম্বরের ৪ তারিখে সর্বোচ্চ উজ্জ্বলতা
সম্পাদনা করেছেন: Tetiana Martynovska 17
২০২৫ সালের শেষ পূর্ণ সুপারমুন, যা ঐতিহ্যগতভাবে 'কোল্ড মুন' নামে পরিচিত, তা বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর মাসের ৪ তারিখে তার সর্বোচ্চ ঔজ্জ্বল্য লাভ করে। এই মহাজাগতিক ঘটনাটি ইস্টার্ন স্ট্যান্ডার্ড টাইম (EST) অনুযায়ী সন্ধ্যা ৬টা ১৪ মিনিটে সর্বোচ্চ উজ্জ্বলতায় পৌঁছায়, যা বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর ভোর ৫টা ১৪ মিনিটে ঘটে। এই মহাজাগতিক ঘটনাটি জ্যোতির্বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কারণ চাঁদ তার কক্ষপথে পৃথিবীর সবচেয়ে নিকটবর্তী বিন্দু, অর্থাৎ পেরিজি-এর সন্নিকটে অবস্থান করছিল।
এই নৈকট্যের ফলস্বরূপ, চাঁদ সাধারণ পূর্ণিমার তুলনায় প্রায় ১৪ শতাংশ বৃহত্তর এবং ৩০ শতাংশ বেশি উজ্জ্বল দেখায়, যা আকাশ পর্যবেক্ষকদের জন্য এক বিশেষ আকর্ষণ সৃষ্টি করে। এই ঘটনাটি অক্টোবর এবং নভেম্বর মাসের সুপারমুনগুলির পরে টানা তৃতীয় এবং শেষ সুপারমুন হিসেবে চিহ্নিত হয়, যা এই মহাজাগতিক প্রদর্শনীর সমাপ্তি ঘোষণা করে। 'কোল্ড মুন' নামকরণটি এসেছে উত্তর গোলার্ধে শীতের সূচনা এবং তাপমাত্রা হ্রাস পাওয়ার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট থেকে, যা গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের বহু আগে থেকেই প্রচলিত ছিল। এই সময়ে রাত দীর্ঘ হয়, এবং এই কারণে কিছু অঞ্চলে একে 'লং নাইট মুন' হিসেবেও অভিহিত করা হয়।
ডিসেম্বরের এই পূর্ণিমা উত্তর গোলার্ধের শীতকালীন অয়নান্তের কাছাকাছি সময়ে সংঘটিত হওয়ায়, এটি রাতের আকাশে দীর্ঘ সময় ধরে দৃশ্যমান থাকে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা উল্লেখ করেছেন যে এই বিশেষ অবস্থানটি ১৮.৬ বছরের একটি বিরল চন্দ্রচক্রের অংশ, যা 'মেজর লুনার স্ট্যান্ডস্টিল' নামে পরিচিত, যা চাঁদকে উত্তর গোলার্ধের আকাশে তার সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছে দেয় এবং ২০৪২ সালের আগে এমন চরম উচ্চতায় আর দেখা যাবে না। বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (বিডব্লিউওটি) নিশ্চিত করেছে যে আবহাওয়া অনুকূল থাকলে দেশের সর্বত্র এই দৃশ্যমান হবে।
যদিও সর্বোচ্চ আলোকোজ্জ্বলতার সময়টি ছিল EST অনুযায়ী সন্ধ্যা ৬টা ১৪ মিনিট, বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী তা শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর ভোর ৫টা ১৪ মিনিটে সর্বোচ্চ উজ্জ্বলতায় পৌঁছায়। চাঁদ দিগন্তের কাছাকাছি উদিত হওয়ার সময় 'মুন ইল্যুশন' নামক একটি মনস্তাত্ত্বিক প্রভাবের কারণে এটিকে আরও বিশাল দেখায়, যদিও জ্যোতির্বিজ্ঞানের পরিভাষায় এর আকারগত পার্থক্য নগণ্য। এই মহাজাগতিক সৌন্দর্য উপভোগের জন্য কোনো বিশেষ যন্ত্রপাতির প্রয়োজন নেই; খালি চোখেই এটি উপভোগ করা সম্ভব, তবে দূরবীন বা টেলিস্কোপ ব্যবহার করলে চাঁদের পৃষ্ঠের গর্ত ও খাঁজগুলি আরও স্পষ্ট প্রতীয়মান হবে।
এই তিন সুপারমুনের ধারাবাহিকতা শেষ হলেও, মহাকাশপ্রেমীদের জন্য পরবর্তী আকর্ষণ অপেক্ষায় রয়েছে। জ্যোতির্বিজ্ঞানী রিচার্ড নোলে কর্তৃক ১৯৭৯ সালে 'সুপারমুন' শব্দটি প্রথম ব্যবহৃত হওয়ার আগে, এই ঘটনাগুলিকে 'পেরিজিয়ান সিজিজি মুন' বা পেরিজিয়ান পূর্ণিমা বলা হতো। এই বছরের শেষ সুপারমুনের পরে, পরবর্তী পূর্ণিমা অর্থাৎ 'উলফ মুন' ২০২৬ সালের ৩ জানুয়ারি তারিখে আকাশে উদিত হবে। নাসার তথ্য অনুযায়ী, সুপারমুনের সময় চাঁদ তার ক্ষীণতম অবস্থার তুলনায় ১৪ শতাংশ বড় এবং ৩০ শতাংশ বেশি উজ্জ্বল হয়, যা এই ঘটনাকে প্রতি বছরই একটি উল্লেখযোগ্য জ্যোতির্বিজ্ঞানের ইভেন্ট হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে। এই ডিসেম্বরের কোল্ড সুপারমুনটি বছরের দ্বিতীয় উজ্জ্বলতম ও দ্বিতীয় বৃহত্তম সুপারমুন হিসেবে পরিগণিত হয়েছে।
21 দৃশ্য
উৎসসমূহ
WTOP
Alfavita
En Son Haber
The Old Farmer's Almanac
Forbes
The Washington Post
Astronomy Magazine
Live Science
Proson.gr
Το Κουτί της Πανδώρας
ScienceAlert
Logotypos.gr
Star Walk
Ensonhaber
Anadolu Ajansı
T24
Sabah
Bustle
এই বিষয়ে আরও খবর পড়ুন:
আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?
আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।
