ইউরোপীয় ডিপ্লোম্যাটিক একাডেমির দরপত্র কেলেঙ্কারিতে ইইউর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা আটক
সম্পাদনা করেছেন: Tatyana Hurynovich
২০২৫ সালের ২রা ডিসেম্বর, মঙ্গলবার, ইউরোপীয় পাবলিক প্রসিকিউটর অফিস (EPPO) কর্তৃক সূচিত একটি তদন্তের সূত্রে বেলজিয়ামের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলি ইউরোপীয় ইউনিয়নের একাধিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এই অভিযানে আটক ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন কলেজ অফ ইউরোপের রেক্টর ফেডেরিকা মোগেরিনি এবং ইউরোপীয় কমিশনের ডিজি মেনায় কর্মরত স্টেফানো সান্নিনো, যিনি ২০২৫ সালের শুরুতে ইউরোপীয় এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের (EEAS) প্রাক্তন মহাসচিব ছিলেন। তাদের সাথে কলেজ অফ ইউরোপের আরও একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকেও হেফাজতে নেওয়া হয়।
এই সমন্বিত অভিযান চলাকালীন, ব্রাসেলসে অবস্থিত EEAS সদর দপ্তর এবং ব্রুজে অবস্থিত কলেজ অফ ইউরোপের ক্যাম্পাসে তল্লাশি চালানো হয়। ইউরোপীয় জালিয়াতি বিরোধী দপ্তর (OLAF) এই আইনি উদ্যোগে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা প্রদান করে। EPPO-এর ফৌজদারি তদন্তের মূল কেন্দ্রবিন্দু হলো ইউরোপীয় ডিপ্লোম্যাটিক একাডেমির জন্য ২০২১ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বিস্তৃত প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়নের চুক্তি প্রদান প্রক্রিয়া।
তদন্তকারীদের প্রাথমিক ধারণা হলো, কলেজ অফ ইউরোপের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দরপত্রের মূল্যায়ন মানদণ্ড সম্পর্কিত গোপন তথ্যে অবৈধভাবে প্রবেশাধিকার লাভ করেছিলেন, যা প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। এই আটকাদেশ কার্যকর করার জন্য EPPO অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কূটনৈতিক দায়মুক্তি প্রত্যাহার করতে সক্ষম হয়েছিল, যা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে পদক্ষেপ নিতে সুযোগ করে দেয়।
আটক কর্মকর্তাদের পূর্ববর্তী কর্মজীবনের কারণে এই মামলাটি বিশেষ তাৎপর্য লাভ করেছে। উল্লেখ্য, ফেডেরিকা মোগেরিনি ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতির উচ্চ প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। অন্যদিকে, স্টেফানো সান্নিনো ২০২১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত EEAS-এর মহাসচিব ছিলেন এবং ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি ডিজি মেনায়ের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
বেলজিয়ামের ফেডারেল জুডিশিয়াল পুলিশ কর্তৃক জিজ্ঞাসাবাদের পর যে অভিযোগগুলি আনা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ক্রয় সংক্রান্ত জালিয়াতি, দুর্নীতি, স্বার্থের সংঘাত এবং পেশাগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের মতো গুরুতর বিষয়। একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো, কলেজ অফ ইউরোপ ২০২২ সালে ব্রুজে প্রায় ৩.২ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে একটি ভবন ক্রয় করে, যেখানে ডিপ্লোম্যাটিক একাডেমির অংশগ্রহণকারীদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল; এই লেনদেনটিও বর্তমানে তদন্তের আওতায় রয়েছে।
বেলজিয়ামের কর্তৃপক্ষ কর্তৃক জিজ্ঞাসাবাদের শেষে, আটককৃত তিন ব্যক্তিকেই সাময়িকভাবে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, কারণ তদন্তকারীরা মনে করেননি যে তারা পালিয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখাতে পারেন। তবে, তারা এখনও সন্দেহভাজন হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছেন। OLAF-এর প্রশাসনিক নিরীক্ষার ভিত্তিতে এই তদন্ত শুরু হয়েছিল এবং এটি বর্তমানেও সক্রিয় রয়েছে, যা ইউরোপীয় প্রশাসনিক সংস্থাগুলিতে নৈতিক মানদণ্ড জোরদার করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনাকে আরও তীব্র করে তুলেছে।
4 দৃশ্য
উৎসসমূহ
gp.se
AML Intelligence
Euronews
European Public Prosecutor's Office
DW
Decode39
এই বিষয়ে আরও খবর পড়ুন:
আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?
আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।
