যুক্তরাজ্যে ডিজিটাল সম্পদকে সম্পত্তি হিসেবে আইনে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি

সম্পাদনা করেছেন: gaya ❤️ one

মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ২, ২০২৫ তারিখে, যুক্তরাজ্য সরকার একটি গুরুত্বপূর্ণ আইনি পদক্ষেপ সম্পন্ন করে যখন রাজা চার্লস কর্তৃক 'প্রপার্টি (ডিজিটাল অ্যাসেটস ইত্যাদি) অ্যাক্ট ২০২৫'-এ রাজকীয় সম্মতি প্রদান করা হয়। এই আইনটি ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং স্টেবলকয়েন সহ ডিজিটাল সম্পদকে আইনের অধীনে সুস্পষ্টভাবে সম্পত্তি হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করে।

এই আইনটি পূর্বে যুক্তরাজ্যের আদালতগুলি দ্বারা মামলার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত নীতিকে বিধিবদ্ধ করে, যার ফলে ডিজিটাল সম্পদ মালিকানা, পুনরুদ্ধার এবং দেউলিয়াত্ব পরিচালনার ক্ষেত্রে একটি সুসংহত আইনি কাঠামো তৈরি হলো। এই নতুন আইনটি ব্যক্তিগত সম্পত্তির ঐতিহ্যবাহী দুটি শ্রেণীবিভাগের বাইরে একটি 'তৃতীয় শ্রেণী'-এর অস্তিত্ব নিশ্চিত করে, যা 'থিং ইন পজেশন' (যেমন গাড়ি) বা 'থিং ইন অ্যাকশন' (যেমন ঋণ) এর মধ্যে পুরোপুরি খাপ খায় না এমন ইলেকট্রনিক 'বস্তু'-কেও ব্যক্তিগত সম্পত্তির অধিকার আকর্ষণ করার অনুমতি দেয়। আইন কমিশন অফ ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ২০২৪ সালে এই ধরনের আনুষ্ঠানিক শ্রেণীকরণের জন্য সুপারিশ করেছিল, যা পূর্বে বিদ্যমান আইনি অস্পষ্টতা দূর করার লক্ষ্য রাখে।

এই বিধিবদ্ধ নিশ্চিতকরণ বাজার অংশগ্রহণকারীদের কাছে একটি শক্তিশালী বার্তা পাঠায় যে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের আইন নতুন ও উদীয়মান সম্পত্তির ক্ষেত্রেও ব্যক্তিগত সম্পত্তির অধিকার রক্ষা করবে। এই পদক্ষেপের ফলে যুক্তরাজ্যে ক্রিপ্টোকারেন্সি ধারকদের জন্য উল্লেখযোগ্য সুবিধা সৃষ্টি হবে, বিশেষত মালিকানা প্রমাণ, চুরি যাওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধার এবং উত্তরাধিকার সংক্রান্ত মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে। অ্যাডভোকেসি গ্রুপ ক্রিপ্টোইউকে (CryptoUK) এই আইনকে স্বাগত জানিয়েছে, কারণ এটি অন্যান্য সম্পত্তির মতোই আস্থা নিশ্চিত করে সুরক্ষা প্রদান করে।

বিটকয়েন পলিসি ইউকে (Bitcoin Policy UK)-এর নীতি প্রধান ফ্রেডি নিউ এটিকে যুক্তরাজ্যের বিটকয়েনের জন্য এবং যারা এটি ধারণ ও ব্যবহার করে তাদের জন্য 'বিশাল অগ্রগতি' হিসেবে অভিহিত করেছেন। এই আইনের ফলে ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষেত্রে যে সুবিধাগুলো পাওয়া যায়, যেমন চুরি হলে মালিকের প্রতিকার, দেউলিয়াত্বের ক্ষেত্রে পাওনাদারদের কাছে সম্পদ উপলব্ধ থাকা, বা উত্তরাধিকারের জন্য সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হওয়া—এই সমস্ত সুবিধা ডিজিটাল সম্পদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। লর্ড স্পিকার জন ম্যাকফল হাউস অফ লর্ডসে এই আইনের পাস হওয়ার ঘোষণা দেন।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ যুক্তরাজ্যের প্রাপ্তবয়স্কদের প্রায় ১২% ক্রিপ্টোকারেন্সি মালিক ছিলেন, যা আগের বছরের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। এই মালিকানার বৃদ্ধি এবং আইনি কাঠামোর স্পষ্টতা বিনিয়োগকারীর আস্থা বাড়াতে সহায়ক হবে, যা ফিনটেক শিল্পের বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই আইনটি যুক্তরাজ্যকে ডিজিটাল সম্পদ সংক্রান্ত আইনি কাঠামোতে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত করে।

উৎসসমূহ

  • Cointelegraph

  • Binance

  • Cointelegraph

  • A&O Shearman | FinReg

  • GOV.UK

  • Parallel Parliament

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।