কনডে ন্যাস্ট ট্রাভেলার ২০২৫ অনুযায়ী বিশ্বসেরা ভোজনরসিক গন্তব্য থাইল্যান্ড

সম্পাদনা করেছেন: Olga Samsonova

বিখ্যাত ভ্রমণ পত্রিকা কনডে ন্যাস্ট ট্রাভেলার তাদের বার্ষিক রিডার্স চয়েস অ্যাওয়ার্ডস ২০২৫ প্রকাশ করেছে, যেখানে থাইল্যান্ড রাজ্য বিশ্বজুড়ে খাদ্যপ্রেমীদের জন্য সেরা গন্তব্য হিসেবে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। তারা ১০০-এর মধ্যে অবিশ্বাস্য ৯৮.৩৩ স্কোর অর্জন করেছে। এই স্বীকৃতি কেবল থাই খাবারের আন্তর্জাতিক প্রভাবকেই তুলে ধরে না, বরং এর গভীর সাংস্কৃতিক ভিত্তিকে প্রমাণ করে, যা সারা বিশ্বের খাদ্যরসিকদের আকর্ষণ করে। দেশটির এই অভূতপূর্ব সাফল্যের মূলে রয়েছে এর বিস্তৃত রন্ধনশৈলীর সম্ভার—যা সাধারণ রাস্তার খাবার থেকে শুরু করে বিশ্বমানের ফাইন ডাইনিং পর্যন্ত বিস্তৃত।

পাঠকদের মূল্যায়নে, থাইল্যান্ডের রন্ধনশিল্প মিষ্টি, টক, নোনতা এবং ঝাল—এই মৌলিক স্বাদগুলোর এক নিখুঁত ভারসাম্য প্রদর্শন করে, যা এক অনন্য সংবেদনশীল অভিজ্ঞতা প্রদান করে। এই সাফল্যের পেছনে রাজধানী ব্যাংককেরও বড় অবদান রয়েছে; ব্যাংককের সাতটি রেস্তোরাঁ বিশ্বসেরা ৩৫টি প্রতিষ্ঠানের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। বিশ্বজুড়ে সমাদৃত কিছু আইকনিক থাই পদ, যেমন প্যাড থাই, টম ইয়াম কুং, গ্রিন কারি এবং ম্যাঙ্গো স্টিকি রাইস, আঞ্চলিক ঐতিহ্যের প্রতি তাদের গভীর শ্রদ্ধাকে প্রতিফলিত করে। উপরন্তু, টেকসই রন্ধনপ্রণালী এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের প্রতি ক্রমবর্ধমান মনোযোগ এই তালিকায় দেশটির অবস্থানকে আরও দৃঢ় করেছে।

এই মর্যাদাপূর্ণ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানটি দখল করেছে ইতালি, যা ৯৬.৯২% স্কোর অর্জন করেছে। তাদের আইকনিক পিৎজা এবং পাস্তার জন্য তারা বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে, বিশেষ করে এমিলিয়া-রোমাগনা অঞ্চলের রন্ধনসম্পদকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তৃতীয় স্থানে রয়েছে জাপানি খাবার, যার স্কোর ৯৬.৭৭%। সুশির প্রযুক্তিগত নির্ভুলতা, টেম্পুরা এবং রামেনের জন্য জাপানি রন্ধনশৈলী স্বীকৃতি লাভ করেছে। বিশেষ করে, টোকিও এখনও মিশেলিন তারকা প্রাপ্ত রেস্তোরাঁর সংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের শীর্ষস্থানে রয়েছে। এই ফলাফলগুলো প্রমাণ করে যে, রন্ধন ঐতিহ্যের মৌলিকত্ব এবং সাংস্কৃতিক গভীরতাকে ভ্রমণকারীরা উচ্চ মূল্য দেন।

চতুর্থ স্থানে রয়েছে ভিয়েতনাম (৯৬.৬৭%), যার ফোহ এবং রাইস রোল-এর মতো তাজা উপাদান সমৃদ্ধ খাবার পর্যটকদের মন জয় করেছে। পঞ্চম স্থানে রয়েছে স্পেন (৯৫.৯১%), যারা তাদের তাপাস সংস্কৃতি এবং সান সেবাস্তিয়ানের মতো গ্যাস্ট্রোনমিক কেন্দ্রগুলির জন্য পরিচিত। শীর্ষ দশে আরও স্থান পেয়েছে নিউজিল্যান্ড (৯৫.৭৯%), শ্রীলঙ্কা (৯৫.৫৬%), গ্রিস (৯৫.৪২%), দক্ষিণ আফ্রিকা (৯৪.৭৬%), এবং দশম স্থানটি যৌথভাবে দখল করেছে পেরু ও মালদ্বীপ (৯৪.৫৫%)।

কনডে ন্যাস্ট ট্রাভেলার-এর ডেপুটি এডিটর জেসি এশলোক জানিয়েছেন যে, ২০২৫ সালের জন্য পাঠকদের পছন্দের গন্তব্য নির্ধারণ করতে ৭০০,০০০-এরও বেশি ভোট গণনা করা হয়েছিল, যা এই র‌্যাঙ্কিংকে যথেষ্ট গুরুত্ব প্রদান করে। এই পুরস্কার প্রদান নিশ্চিত করে যে, খাদ্য পর্যটন এখন অনেক ভ্রমণকারীর ভ্রমণ পরিকল্পনা করার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে, যা তাদের নতুন স্বাদ এবং ঐতিহ্য অনুসন্ধানে উৎসাহিত করে। থাইল্যান্ডের এই শিরোপা জয় প্রমাণ করে যে, তাদের রন্ধনশিল্প বিশ্ব মঞ্চে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র।

উৎসসমূহ

  • The Thaiger

  • Thaiger

  • TEMPO.CO

  • Laotian Times

  • Condé Nast Traveler

  • Seasia.co

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।