মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫) দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস এবং ওয়াশিংটন পোস্ট-এর বিরুদ্ধে একটি মানহানির মামলা দায়ের করেছেন। তিনি এই সংবাদপত্র দুটির বিরুদ্ধে ১৫ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন। ট্রাম্পের অভিযোগ, এই প্রকাশনাগুলো তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য পরিবেশন করে তার সুনাম নষ্ট করেছে এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করেছে।
ট্রাম্প তাঁর "ট্রুথ সোশ্যাল" প্ল্যাটফর্মে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস-কে "ইতিহাসের অন্যতম নিকৃষ্ট ও অসৎ সংবাদপত্র" এবং "চরম বামপন্থীদের প্রচার মাধ্যম" বলে অভিহিত করেছেন। এই মামলাটি দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস এবং দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট-এ প্রকাশিত কিছু প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দায়ের করা হয়েছে, যার মধ্যে দ্য টাইমস-এর "দ্য রুইন অফ দ্য রিচ" বইটি অন্তর্ভুক্ত।
দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস এই মামলাকে ভিত্তিহীন বলে অভিহিত করেছে এবং এটিকে সত্যনিষ্ঠ প্রতিবেদনের বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট করার একটি প্রচেষ্টা হিসেবে বর্ণনা করেছে। তারা একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, "এই আইনি দাবিগুলোর কোনও বাস্তব ভিত্তি নেই। এগুলো বানোয়াট আইনি দাবি এবং দ্য টাইমস-এর কাজকে নীরব ও কলঙ্কিত করার একটি প্রচেষ্টা মাত্র।" সংবাদপত্রটি আরও জানিয়েছে যে তারা ট্রাম্পের এই ধরনের কৌশল দ্বারা প্রভাবিত হবে না।
আইনি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ট্রাম্পের জন্য এই মামলা পরিচালনা করা বেশ চ্যালেঞ্জিং হবে। একজন জনবহুল ব্যক্তিত্ব হিসেবে, ট্রাম্পকে প্রমাণ করতে হবে যে সংবাদপত্রগুলো তাদের প্রতিবেদন প্রকাশের সময় ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে অথবা সত্যের প্রতি চরম উদাসীনতা দেখিয়েছে। জনবহুল ব্যক্তিদের মানহানির মামলায় এটি একটি অত্যন্ত কঠোর মানদণ্ড।
এটি ট্রাম্পের জন্য তার প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচিত সংবাদমাধ্যমগুলোর বিরুদ্ধে দায়ের করা প্রথম মামলা নয়। সম্প্রতি, তিনি সিএনএন এবং সিবিএস নিউজের মতো অন্যান্য সংবাদ সংস্থাগুলির সাথেও আর্থিক নিষ্পত্তিতে পৌঁছেছেন, যেগুলোকে তিনি পক্ষপাতদুষ্ট বা বিভ্রান্তিকর বলে অভিহিত করেছিলেন। এই মামলার অগ্রগতিতে, আদালত কীভাবে এই দাবিগুলি পরিচালনা করে তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা হবে। ট্রাম্প পূর্ববর্তী মামলাগুলির মতো এই মামলায়ও সফল হতে পারেন কিনা তা সময়ই বলবে।
এই ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে, এটি লক্ষণীয় যে ট্রাম্পের এই ধরনের আইনি পদক্ষেপগুলি প্রায়শই সংবাদমাধ্যমের উপর চাপ সৃষ্টি এবং তাদের প্রতিবেদনকে প্রভাবিত করার একটি কৌশল হিসেবে দেখা হয়। এই ধরনের মামলাগুলি প্রায়শই দীর্ঘ এবং ব্যয়বহুল হয়, যা সংবাদ সংস্থাগুলির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করে। তবে, এই ধরনের আইনি লড়াইগুলি প্রায়শই জনস্বার্থের বিষয়গুলিকে সামনে নিয়ে আসে এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার উপরও আলোকপাত করে।