ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা এড়াতে সহায়তার অভিযোগে দুটি চীনা আর্থিক প্রতিষ্ঠান, হেইহে রুরাল কমার্শিয়াল ব্যাংক এবং হেইলংজিয়াং সুইফেনহে রুরাল কমার্শিয়াল ব্যাংককে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। এই নিষেধাজ্ঞাগুলি ৯ই আগস্ট থেকে কার্যকর হয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায়, চীন দুটি লিথুয়ানিয়ান ব্যাংক – ইউএবি আরব ব্যাংকাস (UAB Urbo Bankas) এবং এবি মানো ব্যাংকাস (AB Mano Bankas) – এর উপর পাল্টা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, যা ১৩ই আগস্ট, ২০২৫ থেকে কার্যকর হবে। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে এই ব্যাংকগুলি চীনের কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সাথে লেনদেন বা সহযোগিতা করতে পারবে না। চীন এই পদক্ষেপকে তাদের বৈধ অধিকার ও স্বার্থের উপর গুরুতর আঘাত এবং দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টিকারী বলে অভিহিত করেছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের ১৮তম নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজের অংশ হিসেবে এই দুটি চীনা ব্যাংককে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। অভিযোগ করা হয়েছে যে এই ব্যাংকগুলি রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরোপিত বিধিনিষেধ এড়াতে ক্রিপ্টোকারেন্সি সম্পর্কিত পরিষেবা প্রদান করেছে। এই ঘটনাগুলি কেবল আর্থিক খাতেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও চীনের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কগত টানাপোড়েনের প্রতিফলন। ২০২১ সালে লিথুয়ানিয়ায় তাইওয়ানের প্রতিনিধি কার্যালয় খোলার অনুমতি দেওয়ার পর থেকে উভয় পক্ষের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে, যার ফলে চীন লিথুয়ানিয়ার উপর বাণিজ্য বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল। এছাড়াও, ইউরোপীয় ইউনিয়ন চীনের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত শিল্প ক্ষমতা রপ্তানি এবং বৈদ্যুতিক গাড়ির মতো খাতগুলিতে ভর্তুকিযুক্ত পণ্যের মাধ্যমে বাজার বিকৃত করার অভিযোগ এনেছে। ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে চীনের অবস্থানও ইইউ-এর উদ্বেগের একটি প্রধান কারণ। ইউরোপীয় কমিশনের একজন প্রতিনিধি জানিয়েছেন যে ইইউ এই পদক্ষেপগুলি বিস্তারিতভাবে খতিয়ে দেখছে এবং আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। অন্যদিকে, আরব ব্যাংকাস (Urbo Bankas) জানিয়েছে যে চীনের এই নিষেধাজ্ঞা তাদের আর্থিক কার্যক্রমে কোনো প্রভাব ফেলবে না, কারণ তারা চীনে কোনো আর্থিক লেনদেন বা ব্যবসায়িক সম্পর্ক রাখে না।