অবৈধ ব্যবসার অভিযোগে AliExpress ও Joom-এর বিরুদ্ধে ফ্রান্সের আইনি পদক্ষেপ

ফ্রান্স সরকার আন্তর্জাতিক ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম AliExpress এবং Joom-এর বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে। দেশটির ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ, বাণিজ্য, হস্তশিল্প, পর্যটন এবং ভোক্তা ক্ষমতায়ন মন্ত্রী সার্জ পাপেন গত ২৬ নভেম্বর ২০২৫, বুধবার, TF1 টেলিভিশনে এই ঘোষণা দেন। এই পদক্ষেপটি দেশে নিয়ন্ত্রক নজরদারি জোরদার করার ইঙ্গিত বহন করে।

গত ১২ অক্টোবর ২০২৫ সালে দায়িত্ব গ্রহণ করা মন্ত্রী সার্জ পাপেন স্পষ্ট করেছেন যে এই মামলাগুলির মূল কারণ হলো প্ল্যাটফর্মগুলিতে শিশুদের শোষণের সঙ্গে যুক্ত বলে সন্দেহ করা অবৈধ পণ্যদ্রব্যের লেনদেন শনাক্ত হওয়া। এই অভিযোগটি বাজারের অন্যান্য অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে পূর্বে উত্থাপিত সাধারণ লঙ্ঘনের অভিযোগের চেয়ে গুরুতর, যা প্ল্যাটফর্ম অপারেটরদের কাছ থেকে পদ্ধতিগত দায়বদ্ধতা দাবি করার দিকে একটি পরিবর্তন নির্দেশ করে।

চীনা কোম্পানি AliExpress এবং লাটভিয়ার Joom-এর বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর আগে, ই-কমার্স জায়ান্ট Shein ইতিমধ্যেই কঠোর নিয়ন্ত্রণের মুখে পড়েছিল। ফরাসি ডেটা সুরক্ষা নিয়ন্ত্রক Cnil গত সেপ্টেম্বর ২০২৫ সালে কুকি আইন লঙ্ঘনের জন্য Shein-কে ১৫০ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা করেছিল। এর আগে, জুলাই ২০২৫-এ, বাণিজ্যিক কার্যকলাপ সম্পর্কে গ্রাহকদের বিভ্রান্ত করার অভিযোগে কোম্পানিটি আরও ৪০ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা পেয়েছিল। এছাড়াও, প্যারিসে Shein-এর কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করার বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে।

সরকার কর্তৃক উত্থাপিত একটি মূল বিষয় হলো, প্ল্যাটফর্মগুলিকে কেবল অবৈধ চিহ্নিত পণ্যগুলি সরিয়ে ফেলাই যথেষ্ট নয়, বরং তাদের অবশ্যই পণ্য বাজারে আনার আগেই সেগুলির প্রয়োজনীয় মান পূরণের প্রমাণ দিতে হবে। মন্ত্রী পাপেন জোর দিয়ে বলেছেন যে এই লড়াই ভোক্তা, তরুণ প্রজন্ম এবং দেশের অভ্যন্তরীণ শিল্পকে রক্ষা করার লক্ষ্যে পরিচালিত। এটি সরকারের পূর্বঘোষিত ই-কমার্স নিয়ন্ত্রণের বৃহত্তর কর্ম পরিকল্পনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ, যা ২০২৫ সালের শুরুতে ঘোষণা করা হয়েছিল।

এদিকে, AliExpress জানিয়েছে যে তারা নভেম্বর ২০২৫-এর শুরুতে অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করার পরে বিতর্কিত বিজ্ঞাপনগুলি সরিয়ে ফেলেছে। তবে, সরকার এই পদ্ধতিগত সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য একটি বৃহত্তর ইউরোপীয় পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিচ্ছে। এটি ডিজিটাল ক্ষেত্রে নজরদারি বৃদ্ধির সাধারণ প্রবণতাকে প্রতিফলিত করে, যার মধ্যে ২০২৫ সালে ফ্রান্সের ডিজিটাল পরিষেবা আইন (DSA) পূর্ণাঙ্গভাবে প্রয়োগ করার প্রস্তুতিও অন্তর্ভুক্ত।

২০২৪ সালে ফ্রান্সের ই-কমার্স লেনদেন ১৭৫.৩ বিলিয়ন ইউরোতে পৌঁছানোর পরিপ্রেক্ষিতে, এই অর্থনৈতিক বাস্তবতা পণ্যের নিরাপত্তার ওপর গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজনীয়তাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। মন্ত্রী পাপেন এই সমস্যার ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্তরে সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন, যা এই সমস্যার আন্তঃসীমান্ত প্রকৃতি এবং সমন্বিত পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তাকে স্বীকৃতি দেয়। এই পদক্ষেপগুলি স্পষ্ট করে যে ফ্রান্স এখন ডিজিটাল বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আরও কঠোর অবস্থান নিতে প্রস্তুত।