১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজা সিটিতে স্থল অভিযান শুরু করেছিল। এই অভিযানের অংশ হিসেবে শহরটিতে ব্যাপক বিমান হামলা চালানো হয় এবং ট্যাঙ্ক প্রবেশ করে। হামাসকে নির্মূল করার লক্ষ্যে এই অভিযান পরিচালিত হলেও, এতে জিম্মিদের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়, যা আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলেও সাড়া ফেলে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছিল, তারা হামাস জঙ্গিদের দ্বারা অধিকৃত বলে দাবি করা ৫০টিরও বেশি বহুতল ভবন ধ্বংস করেছে। ফিলিস্তিনি সূত্রগুলো ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক শহরে প্রবেশের খবর নিশ্চিত করেছিল। উত্তর গাজায় এই অভিযানকে বিগত দুই বছরের মধ্যে নজিরবিহীন বলে বর্ণনা করা হচ্ছিল। অভিযানের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সপ্তাহব্যাপী ব্যাপক ভবন ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছিল। বেসামরিক নাগরিকদের বারবার শহর ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ সেখানে রয়ে গিয়েছিলেন।
এই পরিস্থিতিতে, জিম্মিদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। জিম্মিদের পরিবারগুলো মনে করেছিল, গাজা সিটিতে এই হামলা তাদের প্রিয়জনদের জন্য মৃত্যুদণ্ডস্বরূপ এবং এটি তাদের শেষ রাত হতে পারে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হামাসের কর্মকাণ্ডকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন এবং অবিলম্বে সকল জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও এর প্রভাব পড়েছিল। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্ক রুবিও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সাথে সাক্ষাৎ করে এই বিষয়ে আলোচনা করেছিলেন। অন্যদিকে, আরব ও ইসলামী দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধানরা দোহায় একটি সম্মেলনে মিলিত হয়ে এই সংঘাত এবং মানবিক উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। এই ঘটনাটি এই অঞ্চলের অস্থির ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছিল। এই সংঘাতের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব কী হবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল।
হামাসের হাতে তখনও প্রায় ৪৮ জন জিম্মি ছিল, যাদের মধ্যে প্রায় ২০ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছিল। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছিল, তারা জিম্মিদের যেখানে রাখা হয়েছে, সেইসব এলাকা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছে। তবে অতীতেও এমন ঘটনা ঘটেছিল যেখানে তারা অজান্তেই জিম্মিদের লক্ষ্যবস্তু করেছিল।
এই পরিস্থিতিতে, প্রায় এক মিলিয়ন বেসামরিক নাগরিককে শহর ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, যদিও প্রায় ৭০০,০০০ মানুষ তখনও গাজা সিটিতে অবস্থান করছিলেন। এই মানবিক সংকট এবং সংঘাতের ভবিষ্যৎ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর উদ্বেগ বিরাজ করছিল। এই ঘটনাটি অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হয়েছিল।