অক্টোবর মাসের শুরুতে গাজা সাহায্য ফ্লোটিলা ইসরায়েলি বাহিনী কর্তৃক আটকের পর ইউরোপের প্রধান শহরগুলিতে ব্যাপক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। বার্সেলোনা, রোম এবং লন্ডনে অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভগুলিতে বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ নেয় এবং বেশ কয়েকজন গ্রেপ্তারও হয়। এই ঘটনাটি গাজার মানবিক সংকট এবং ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে জনরোষকে তুলে ধরে।
অক্টোবর ২, ২০২৫ তারিখে, ইসরায়েলি বাহিনী ৪০টিরও বেশি জাহাজ এবং প্রায় ৫০০ জন কর্মীর একটি গাজা সাহায্য ফ্লোটিলা আটক করে। এর প্রতিক্রিয়ায়, অক্টোবর ৪, ২০২৫ তারিখে, বড় আকারের বিক্ষোভ শুরু হয়। বার্সেলোনায়, প্রায় ৭০,০০০ মানুষ ফিলিস্তিনি পতাকা এবং "গাজা আমাকে কষ্ট দেয়" ও "গণহত্যা বন্ধ করুন" লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে জড়ো হয়। রোমে, হাজার হাজার মানুষ ফিলিস্তিনি সংগঠন, শ্রমিক ইউনিয়ন এবং শিক্ষার্থীদের আয়োজিত একটি বিক্ষোভে অংশ নেয়। লন্ডনে, একটি পূর্ববর্তী হামলার কারণে পুলিশ স্থগিত করার অনুরোধ সত্ত্বেও, প্যালেস্টাইন অ্যাকশনের সমর্থনে একটি বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়, যার ফলে অন্তত ১৭৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এই ঘটনাটি গাজার মানবিক সংকট এবং ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ইউরোপীয় জনগণের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগকে স্পষ্ট করে তোলে। বিক্ষোভগুলিতে অংশগ্রহণকারী বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, মান্ডলা মান্ডেলা (নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি) এবং আদা কোলাউ (বার্সেলোনার প্রাক্তন মেয়র)। এই বিশিষ্ট ব্যক্তিরা ফ্লোটিলার বোর্ডে আটক হয়েছিলেন, লন্ডনের বিক্ষোভে নয়।
এই ঘটনাটি ইউরোপীয় দেশগুলির সাথে ইসরায়েলের কূটনৈতিক সম্পর্ককেও প্রভাবিত করেছে। এই ঘটনাটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সমালোচিত হয়েছে, যেখানে অনেক দেশ ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই ঘটনাকে "ইচ্ছাকৃত ভীতি প্রদর্শনের কাজ" বলে অভিহিত করেছে।
এই বিক্ষোভগুলি গাজার দীর্ঘস্থায়ী অবরোধ এবং মানবিক সংকটের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। ইউরোপীয় নেতারা গাজার মানবিক সংকট মোকাবেলায় এবং ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক পুনর্বিবেচনার জন্য চাপের মুখে রয়েছেন। এই ঘটনাটি কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং নীতি পরিবর্তনের উপর কী প্রভাব ফেলবে তা দেখার বিষয়।