গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি চূড়ান্ত করার কাছাকাছি পৌঁছেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল। এই চুক্তিটি একটি ২১-দফা পরিকল্পনার উপর ভিত্তি করে তৈরি, যা মার্কিন কর্মকর্তারা ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সাথে নিউ ইয়র্কে আলোচনা করেছেন। এই পরিকল্পনাটি যুদ্ধ শেষ করার পাশাপাশি জিম্মি মুক্তি এবং গাজার ভবিষ্যৎ শাসনের রূপরেখা প্রদান করে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং তার জামাতা জ্যারেড কুশনার গত ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সাথে নিউ ইয়র্কে এক বৈঠকে মিলিত হন। সেখানে তারা ২১-দফা পরিকল্পনাটি নিয়ে আলোচনা করেন। এই পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য হলো গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা করা, সকল জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া এবং গাজার অভ্যন্তরে একটি আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন করা। এছাড়াও, এটি গাজার ভবিষ্যৎ শাসনের জন্য একটি আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধায়ক সংস্থার প্রস্তাব করে, যা একটি ফিলিস্তিনি কমিটির মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থাপনা তত্ত্বাবধান করবে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই চুক্তি নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন এবং বলেছেন, "আমরা খুব কাছাকাছি"। তবে, একজন সিনিয়র মার্কিন কর্মকর্তা উল্লেখ করেছেন যে, যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল একটি চুক্তির কাছাকাছি, হামাসের সম্মতি এখনও প্রয়োজন। জাতিসংঘও দুই-রাষ্ট্র সমাধানের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছে এবং গাজায় যুদ্ধবিরতি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে যাতে আরও উত্তেজনা প্রতিরোধ করা যায়।
এই সংবাদটি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক কারণ একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি এই অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তন করতে পারে এবং চলমান সংঘাতের অবসান ঘটাতে পারে। এই পরিকল্পনার সাফল্য মূলত হামাসের সম্মতির উপর নির্ভর করছে, যা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই উদ্যোগের দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে, কারণ এটি মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘমেয়াদী শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে। তবে, চুক্তির বাস্তবায়ন এবং এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব নিয়ে এখনও অনেক প্রশ্ন রয়েছে। ২১-দফা পরিকল্পনায় গাজাকে একটি সন্ত্রাসমুক্ত অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলা, এর পুনর্গঠন এবং একটি স্থিতিশীল শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। এই পরিকল্পনায় গাজার জনগণের জন্য একটি উন্নত ভবিষ্যৎ নির্মাণের সুযোগও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।