আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক অঙ্গনে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে পর্তুগাল ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। পর্তুগালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাওলো রাঙ্গেল এই ঘোষণা দিয়েছেন, যা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের একটি ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী সমাধানের প্রতি দেশটির অঙ্গীকারের প্রতিফলন।
পাওলো রাঙ্গেল বলেছেন যে এই স্বীকৃতি একটি দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে। তিনি ইসরায়েলের অস্তিত্বের অধিকারের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন এবং হামাসের ৭ অক্টোবর, ২০২৩-এর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানান। রাঙ্গেল অবিলম্বে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি এবং নিহতদের দেহ তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান, পাশাপাশি ইহুদি-বিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াই করার কথাও বলেন।
এই স্বীকৃতির ফলে পর্তুগাল অস্ট্রেলিয়া, কানাডা এবং যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলোর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, যারা সম্প্রতি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ফ্রান্স, বেলজিয়াম, মাল্টা এবং লুক্সেমবার্গের মতো দেশগুলোও ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে এবং তারা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে একটি উচ্চ-পর্যায়ের সম্মেলনে অংশ নেবে যেখানে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রত্বের বিষয়টি আলোচিত হবে।
হামাসের ৭ অক্টোবর, ২০২৩-এর হামলায় প্রায় ১২০০ জন নিহত এবং ২৫০ জনের বেশি জিম্মি হয়েছিল। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে, যার ফলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুসারে ৬৫,০৩৪ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১৪৫,৮৭০ জনের বেশি আহত হয়েছে। এই পরিসংখ্যানগুলো সংঘাতের ভয়াবহতা তুলে ধরে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এই ধরনের স্বীকৃতিকে "সন্ত্রাসের পুরস্কার" হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন যে এটি ইসরায়েলের অস্তিত্বের জন্য হুমকি। তিনি পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি সম্প্রসারণের পরিকল্পনাও ঘোষণা করেছেন। অন্যদিকে, ফিলিস্তিনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন যে এই স্বীকৃতিগুলি ফিলিস্তিনি অঞ্চলগুলিতে ইসরায়েলের সার্বভৌমত্বের অভাবকে নিশ্চিত করে।
পর্তুগালের এই পদক্ষেপটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রত্বের বিষয়ে ক্রমবর্ধমান ঐকমত্য এবং দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের সমাধানের আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত করে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক পরিবর্তন যা মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতিকে আরও প্রভাবিত করবে বলে আশা করা হচ্ছে। পর্তুগালের এই পদক্ষেপ শান্তি ও ন্যায়বিচারের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা দুই-রাষ্ট্র সমাধানের মাধ্যমে একটি স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পরিচালিত।