নাসা (NASA) ২০২৬ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারি আর্টেমিস II মিশনের মাধ্যমে চাঁদের উদ্দেশ্যে এক ঐতিহাসিক যাত্রা শুরু করতে চলেছে। এই মিশনটি ওরিয়ন (Orion) মহাকাশযানের প্রথম মনুষ্যবাহী উড়ান এবং স্পেস লঞ্চ সিস্টেম (SLS) রকেটের প্রথম ব্যবহার হিসেবে চিহ্নিত হবে। চারজন নভোচারী প্রায় ১০ দিনের এই সফরে চাঁদের চারপাশ প্রদক্ষিণ করে পৃথিবীতে ফিরে আসবেন।
এই অভিযানের মূল উদ্দেশ্য হলো ভবিষ্যতের চন্দ্রপৃষ্ঠে মানব বসতি স্থাপনের পথ সুগম করা। যদিও এই মিশনে চাঁদে অবতরণ করা হবে না, তবে ওরিয়ন মহাকাশযানের গভীর মহাকাশে কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হবে। নভোচারীরা চাঁদ থেকে প্রায় ৬,৪০০ মাইল (প্রায় ১০,৩০০ কিলোমিটার) দূরে ভ্রমণ করবেন। আর্টেমিস II মিশনের সমাপ্তি ঘটবে প্রশান্ত মহাসাগরে, ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূলের কাছে ওরিয়ন মহাকাশযানের অবতরণের মাধ্যমে।
নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টারে ওরিয়ন মহাকাশযান এবং SLS রকেট চূড়ান্তভাবে একত্রিত ও পরীক্ষামূলকভাবে প্রস্তুত করা হচ্ছে। এই মিশনে নাসার নভোচারী রেইড ওয়াইসম্যান (Reid Wiseman), ভিক্টর গ্লোভার (Victor Glover) এবং ক্রিস্টিনা কোচ (Christina Koch)-এর সাথে কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সির (CSA) জেরেমি হ্যানসেন (Jeremy Hansen) অংশগ্রহণ করবেন। এটি হবে ১৯৭২ সালের অ্যাপোলো ১৭ (Apollo 17) মিশনের পর প্রথম মনুষ্যবাহী মহাকাশ অভিযান যা পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথের বাইরে যাবে।
এই মহাকাশযানটির নাম দেওয়া হয়েছে 'ইন্টিগ্রিটি' (Integrity)। এই নামটি নভোচারী এবং এর সাথে যুক্ত হাজার হাজার প্রকৌশলী, প্রযুক্তিবিদ ও বিজ্ঞানীদের মধ্যেকার বিশ্বাস, সম্মান এবং ঐক্যের প্রতীক। আর্টেমিস II মিশনের লক্ষ্য হলো চাঁদের চারপাশের পরিবেশ এবং মহাকাশযানের বিভিন্ন সিস্টেম পরীক্ষা করা, যা ভবিষ্যতের চন্দ্রাভিযান এবং মঙ্গল গ্রহের মানব মিশনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই মিশনটি মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা যোগাবে।