ভাষাবিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ দৈনন্দিন কথোপকথনের পেছনের মানসিক প্রক্রিয়াগুলি অন্বেষণ করছেন

সম্পাদনা করেছেন: Vera Mo

উত্তরumbria বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন বিশিষ্ট ভাষাবিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বিলি ক্লার্ক বর্তমানে 'প্রোডিউসিং অ্যান্ড ইভ্যালুয়েটিং স্টাইল' নামক একটি গবেষণা প্রকল্পের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এই প্রকল্পটি লিভারহুলমে ট্রাস্টের দুই বছরের একটি মর্যাদাপূর্ণ মেজর রিসার্চ ফেলোশিপ দ্বারা সমর্থিত। এই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য হলো আমরা প্রতিদিনের কথোপকথন কীভাবে তৈরি করি এবং একে অপরের বার্তাগুলি কীভাবে গ্রহণ করি, সেই অন্তর্নিহিত মানসিক প্রক্রিয়াগুলি উন্মোচন করা। অধ্যাপক ক্লার্কের গবেষণার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে একটি মৌলিক প্রশ্ন: যখন কেউ একটি নির্দিষ্ট স্বরভঙ্গি এবং বিশেষ অ-মৌখিক আচরণের মাধ্যমে বলে "আমি ক্লান্ত", তখন ঠিক কোন মানসিক প্রক্রিয়াগুলি তাদের এই বিশেষ উপায়ে যোগাযোগ করতে চালিত করে? এবং আমরা, শ্রোতারা, তাদের কথার প্রকৃত অর্থ কীভাবে উপলব্ধি করি?

তাঁর গবেষণা আরও গভীরে গিয়ে পরীক্ষা করবে যে এই যোগাযোগমূলক প্রক্রিয়াগুলি কি সচেতন যুক্তিতর্কের মাধ্যমে ঘটে, নাকি এগুলি আরও স্বতঃস্ফূর্ত এবং সহজাতভাবে সম্পন্ন হয়। এই গবেষণাটি মূলত 'প্রাসঙ্গিকতা তত্ত্ব' (Relevance Theory) দ্বারা অনুপ্রাণিত, যা প্রস্তাব করে যে মানুষ অন্যের অভিপ্রায় দ্রুত এবং কার্যকরভাবে বোঝার জন্য মানসিক শর্টকাট বা 'হিউরিস্টিকস' (heuristics) ব্যবহার করে। এই তত্ত্ব অনুসারে, আমরা কেবল শব্দের আক্ষরিক অর্থের চেয়ে অনেক বেশি তথ্য প্রকাশ করি এবং গ্রহণ করি। প্রতিটি যোগাযোগ একটি 'সর্বোত্তম প্রাসঙ্গিকতা' (optimal relevance) তৈরি করে, যেখানে প্রাপ্ত তথ্য থেকে সর্বাধিক জ্ঞান লাভ করা যায় এবং তার জন্য ন্যূনতম প্রচেষ্টা প্রয়োজন হয়।

এই প্রাসঙ্গিকতা কেবল মৌখিক বার্তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং স্বরভঙ্গি, কণ্ঠস্বরের ওঠানামা, মুখের অভিব্যক্তি এবং শারীরিক ভাষার মতো অ-মৌখিক সংকেতগুলিকেও অন্তর্ভুক্ত করে, যা বার্তার অর্থকে গভীরভাবে প্রভাবিত করতে পারে এবং কখনও কখনও শব্দের চেয়েও বেশি শক্তিশালী বার্তা বহন করে। অধ্যাপক ক্লার্কের কাজের একটি বিশেষ দিক হলো, তিনি মানুষের যোগাযোগের দুটি গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু প্রায়শই অবহেলিত ক্ষেত্রকে একত্রিত করেছেন: যোগাযোগের উৎপাদন এবং এর মূল্যায়ন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, যোগাযোগের উৎপাদন প্রক্রিয়া নিয়ে অনেক গবেষণা হলেও, যোগাযোগের মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে খুব কমই কাজ হয়েছে। তাঁর গবেষণা এই শূন্যস্থান পূরণের চেষ্টা করবে, যা আমাদের বুঝতে সাহায্য করবে আমরা কীভাবে অন্যের বার্তা গ্রহণ করি এবং সেগুলির যথার্থতা বা প্রাসঙ্গিকতা বিচার করি।

এই গভীর অন্তর্দৃষ্টি অর্জনের জন্য, অধ্যাপক ক্লার্ক পরীক্ষামূলক পদ্ধতি ব্যবহার করবেন। অংশগ্রহণকারীদের তাদের বক্তব্যের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়াগুলি (ইতিবাচক বা নেতিবাচক) অনুমান করতে বলা হবে, যা গবেষকরা পরে প্রকৃত ফলাফলের সাথে তুলনা করবেন। এছাড়াও, 'স্টিমুলেটেড রিকল' (stimulated recall) নামক একটি অভিনব পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে, যেখানে অংশগ্রহণকারীরা কথা বলার ঠিক পরেই তাদের যোগাযোগ পছন্দের কারণগুলি ব্যাখ্যা করবেন। এই পদ্ধতিগুলি দৈনন্দিন ভাষার ব্যবহারের পেছনের রিয়েল-টাইম চিন্তাভাবনার প্রক্রিয়াগুলিকে জীবন্তভাবে তুলে ধরতে সহায়ক হবে। এই গবেষণা থেকে প্রাপ্ত ফলাফলগুলি একটি গুরুত্বপূর্ণ একাডেমিক বই আকারে প্রকাশিত হবে এবং এটি শিক্ষাক্ষেত্রে, বিশেষ করে ভাষাবিজ্ঞান ও যোগাযোগ অধ্যয়নে, নতুন শিক্ষামূলক উপকরণ তৈরিতেও মূল্যবান অবদান রাখবে। এটি কেবল একাডেমিক জগতেই নয়, বরং আমাদের দৈনন্দিন জীবনেও মানুষের পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং সংযোগ স্থাপনের পদ্ধতিকে উন্নত করার ক্ষেত্রে নতুন আলোকপাত করবে। লিভারহুলমে ট্রাস্টের মতো ফেলোশিপগুলি এই ধরনের মৌলিক এবং যুগান্তকারী গবেষণাকে সম্ভব করে তোলে, যা মানব জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করে। এই গবেষণা আমাদের শেখায় যে, যোগাযোগ কেবল শব্দ বিনিময়ের একটি প্রক্রিয়া নয়, বরং এটি একটি জটিল মানসিক এবং সামাজিক মিথস্ক্রিয়া, যা আমাদের একে অপরের সাথে সংযোগের গভীরতা নির্ধারণ করে।

উৎসসমূহ

  • The Northern Echo

  • New research could transform how we understand human interaction

  • Professor Billy Clark

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।