প্রাচীন প্রজ্ঞা ও আধুনিক দক্ষতার সমন্বয়ে পতঞ্জলি গুরুকুলম

সম্পাদনা করেছেন: Olga Samsonova

পতঞ্জলি গুরুকুলম ভারতের শিক্ষাব্যবস্থায় এক নতুন ধারার সূচনা করেছে, যা আচার্যকুলাম বিশ্ববিদ্যালয়কেও অন্তর্ভুক্ত করে। এই প্রতিষ্ঠানের উদ্বোধন হয়েছিল ২০২৩ সালের জুন মাসে স্বামী রামদেব এবং আচার্য বালকৃষ্ণের উপস্থিতিতে। এই প্রতিষ্ঠানটি কেবল সাংস্কৃতিক পুনরুজ্জীবনের ধারক নয়, বরং ২০২৫ সাল নাগাদ বিশ্বব্যাপী শিক্ষাগত প্রস্তুতির ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে প্রস্তুত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির মূল চালিকাশক্তি স্বামী রামদেবের নেতৃত্বে প্রাচীন ভারতীয় ঐতিহ্য, যেমন বেদ ও উপনিষদের গভীর জ্ঞানকে আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সঙ্গে একীভূত করা হচ্ছে। এই কাঠামোর মধ্যে শিক্ষার্থীদের জন্য সংস্কৃত ও ভারতীয় দর্শন অধ্যয়ন বাধ্যতামূলক, যার পাশাপাশি তারা দশটিরও বেশি ভাষা এবং শতাধিক ব্যবহারিক দক্ষতা অর্জনের সুযোগ পায়। গুরুকুলমের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা যোগ ও আয়ুর্বেদের ওপর ভিত্তি করে সুসংগঠিত, যেখানে দিনের শুরু হয় মানসিক একাগ্রতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে যোগাভ্যাসের মাধ্যমে। খাদ্যাভ্যাস কঠোরভাবে 'সাত্ত্বিক' রাখা হয়, যা শরীর ও মন উভয়ের জন্য বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করার একটি সাংস্কৃতিক অনুশীলন।

আচার্যকুলাম বিশেষভাবে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান করে এবং এটি কেন্দ্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের (CBSE)-এর সঙ্গে সংযুক্ত। তবে বৃহত্তর গুরুকুলম কাঠামো প্রাক-নার্সারি থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষা প্রদান করে। ২০২৫ সালের শুরুর দিকে, স্বামী রামদেব শিক্ষার ক্ষেত্রে এক নতুন ধারার কথা উল্লেখ করেন, যেখানে পতঞ্জলি গুরুকুলম এবং আচার্যকুলামের মতো প্রতিষ্ঠানগুলির গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। এই প্রতিষ্ঠানগুলি ভারতীয় শিক্ষা বোর্ড (BSB)-এর সঙ্গে যুক্ত, যা ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং ভারত সরকারের শিক্ষা মন্ত্রকের উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে অনুমোদনপ্রাপ্ত।

BSB-এর লক্ষ্য হলো আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ৫ লক্ষ বিদ্যালয়কে সংযুক্ত করা, যার মাধ্যমে ভারত থেকে একটি বৈশ্বিক শিক্ষাগত পরিবর্তনের নেতৃত্ব দেওয়ার অভিপ্রায় রয়েছে। এই শিক্ষাব্যবস্থার মূল উদ্দেশ্য হলো ভারতীয় জ্ঞান পরম্পরা এবং গুরুকুল ব্যবস্থার পুনরুজ্জীবন ঘটানো, যা ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের সময় প্রবর্তিত শিক্ষানীতির বিপরীতে অবস্থান করে। BSB-এর পাঠ্যক্রম প্রাচীন ভারতীয় প্রজ্ঞা এবং সমসাময়িক বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের এক উদ্ভাবনী সংমিশ্রণ, যেখানে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইংরেজি, কলা ও গণিতের (STEAM) ওপর জোর দেওয়া হয়।

স্বামী রামদেব এই উদ্যোগের মাধ্যমে এমন এক প্রজন্ম তৈরি করতে চান যারা তাদের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধে প্রোথিত থাকবে, অথচ আধুনিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সজ্জিত হবে। এই প্রচেষ্টা কেবল শিক্ষার মানোন্নয়ন নয়, বরং অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শিশুদের জন্য উন্নত শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করাও এর অন্যতম লক্ষ্য। এর জন্য পতঞ্জলি তাদের কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (CSR) কর্মসূচির অধীনে ৫০০টিরও বেশি স্কুল খোলার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে।

5 দৃশ্য

উৎসসমূহ

  • The Statesman

  • Vertex AI Search

  • Vertex AI Search

  • Vertex AI Search

  • Vertex AI Search

  • Free Press Journal

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।