জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে বেলারুশ থেকে আসা ড্রোন হুমকির মোকাবিলায় লিথুয়ানিয়া জরুরি অবস্থা জারি করল

সম্পাদনা করেছেন: Tatyana Hurynovich

২০২৫ সালের ৯ই ডিসেম্বর, লিথুয়ানিয়ার সরকার সমগ্র প্রজাতন্ত্র জুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই কঠোর পদক্ষেপের মূল কারণ হলো প্রতিবেশী বেলারুশ প্রজাতন্ত্রের ভূখণ্ড থেকে অবৈধভাবে চালিত গোপনীয় মনুষ্যবিহীন আকাশযান (UAV) এবং বেলুন উৎক্ষেপণ। লিথুয়ানিয়ার কর্তৃপক্ষ এই ঘটনাগুলিকে সরাসরি জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি হুমকি এবং একটি সুসংগঠিত হাইব্রিড আক্রমণের অংশ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

এই বছর অর্থাৎ, ২০২৫ সালের শুরু থেকে লিথুয়ানিয়ার আকাশসীমায় প্রায় ৬০০টি বেলুন এবং ২০০টি ড্রোন প্রবেশ করেছে। এর ফলস্বরূপ ৩০০টিরও বেশি বিমান চলাচল ব্যাহত হয়েছে, যার দ্বারা প্রায় ৪৭ হাজার যাত্রী প্রভাবিত হয়েছেন। জরুরি অবস্থার সময় রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভ্লাদিশ্লাভ কন্দ্রাতোভিচের ওপর, যিনি ২০২৪ সালের শেষভাগ থেকে এই পদে অধিষ্ঠিত আছেন। সরকার জানিয়েছে যে এই জরুরি অবস্থা কার্যকর হওয়ার ফলে আরও নিবিড় পদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব হবে, যা প্রতিরক্ষা বাহিনীকে হুমকির মোকাবিলায় আরও সমন্বিতভাবে কাজ করার সুযোগ দেবে।

এই আকাশযান-সম্পর্কিত সংকটটি মূলত শুরু হয়েছিল ২০২২ সালের অক্টোবর মাস থেকে। রাষ্ট্রপতি গিতানাস নাউসেদা এই ঘটনাগুলিকে লিথুয়ানিয়ার অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা নষ্ট করার উদ্দেশ্যে 'পরিকল্পিত কার্যকলাপ' বলে অভিহিত করেছেন। অন্যদিকে, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে নিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী ইঙ্গা রুগিনিয়েনে মিনস্কের এই বেলুন অনুপ্রবেশকে সরাসরি 'হাইব্রিড আক্রমণ' বলে আখ্যা দিয়েছেন। লিথুয়ানিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জনসাধারণকে আশ্বস্ত করেছে যে গৃহীত সমস্ত ব্যবস্থা কঠোরভাবে আনুপাতিক হবে এবং শুধুমাত্র বেআইনি কার্যকলাপের সংগঠকদের লক্ষ্য করেই পরিচালিত হবে।

এই ঘটনাগুলির ফলে বস্তুগত এবং লজিস্টিক ক্ষতি যথেষ্ট পরিমাণে হয়েছে। সংকটের শুরু থেকে ভিলনিয়াস বিমানবন্দরের ওপরের আকাশসীমা মোট ৬০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বন্ধ রাখতে হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ১লা ডিসেম্বরের ঘটনাটি, যেখানে ৬০টি ইউএভি উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল, বিমানবন্দরকে ১১ ঘণ্টার জন্য অচল করে দেয় এবং ৭,৪০০-এরও বেশি যাত্রীর ভ্রমণ পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। মন্ত্রী কন্দ্রাতোভিচ জানিয়েছেন যে চোরাচালান রোধে অভিযান পরিচালনার ফলাফলের ভিত্তিতে এক মাস পর জরুরি অবস্থার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হবে। এর আগে, গত ২৩শে সেপ্টেম্বর, লিথুয়ানিয়ার সংসদ সেইম আকাশসীমার হুমকি মোকাবিলায় সেনাবাহিনীকে বলপ্রয়োগের অনুমতি দিয়ে আইন সংশোধন করেছিল।

লিথুয়ানিয়ার সরকার বেলারুশের এই আবহাওয়া বেলুন সংক্রান্ত কার্যকলাপকে সন্ত্রাসবাদের কাজ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা শুরু করেছে। এর আগে, গত অক্টোবরের শেষের দিকে, সরকার বেলারুশের সাথে সীমান্ত এক মাসের জন্য বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে, বিদেশে আটকে থাকা লিথুয়ানিয়ার নাগরিকদের দেশে ফেরানো নিশ্চিত করার জন্য সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা স্থগিত রাখা হয়েছিল। এই পদক্ষেপগুলি প্রমাণ করে যে লিথুয়ানিয়া তার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কোনো প্রকার আপস করতে প্রস্তুত নয়।

4 দৃশ্য

উৎসসমূহ

  • Крым.Реалии

  • Polska Agencja Prasowa SA - PAP

  • Tochka.by

  • Smartpress.by

  • Википедия

  • Европейская правда

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।