যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার আগামী ১৭ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমন্ত্রণে এই রাষ্ট্রীয় সফর অনুষ্ঠিত হবে, যা দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সম্পর্ককে আরও জোরদার করবে। এই সফরের মূল আলোচ্যসূচির মধ্যে রয়েছে দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলী।
বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হবে, যেখানে একটি বাণিজ্য চুক্তির চূড়ান্তকরণ এবং ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের উপর শুল্ক হ্রাস করার উপর জোর দেওয়া হবে। উভয় দেশ একটি বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে যা গাড়ির আমদানি শুল্ক হ্রাস করেছে, কিন্তু ব্রিটিশ ইস্পাত নিয়ে কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে পারেনি, যার ফলে এর উপর ২৫% শুল্ক বহাল রয়েছে। এই শুল্কের মূল কারণ হলো বিশ্ব বাজারে ইস্পাত পণ্যের সরবরাহ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ, যা যুক্তরাজ্যে তৈরি হলেও অন্য দেশ থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করে। তবে, যুক্তরাষ্ট্র ব্রিটিশ স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছে বলে ব্রিটিশ সরকার জানিয়েছে।
আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা একটি প্রধান বিষয় হবে, যেখানে ইউক্রেনের সংঘাতের কৌশল এবং শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা করা হবে। এছাড়াও, মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি, বিশেষ করে গাজার সংঘাত নিয়ে আলোচনা করা হবে। একটি যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করা এবং মানবিক সহায়তা প্রদানের বিষয়েও আলোকপাত করা হবে। ইউক্রেন যুদ্ধ এবং গাজার পরিস্থিতি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে কিছু মতপার্থক্য থাকলেও, এই সফর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার একটি সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
রাষ্ট্রীয় সফরটি উইন্ডসর ক্যাসেলের রাজকীয় অভিবাদন, একটি শোভাযাত্রা এবং একটি পুষ্পস্তবক অর্পণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শুরু হবে। এই সফরের আগে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমারকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে শুল্ক সংক্রান্ত বিষয়ে চাপ বাড়ানোর জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। ব্রিটিশ সংসদের বিজনেস অ্যান্ড ট্রেড কমিটি বলেছে যে এই মুহূর্তটি মার্কিন প্রেসিডেন্টকে একটি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি চুক্তির চূড়ান্ত শর্তাবলী মেনে নিতে চাপ দেওয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রযুক্তি ও পারমাণবিক প্রকল্পে ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের চুক্তি স্বাক্ষর করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই চুক্তিগুলো ডিজিটাল ও জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ আকর্ষণ করবে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার ত্বরান্বিত করবে। উভয় দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিতে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং প্রধান আর্থিক কেন্দ্রগুলির মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী স্টারমার এই সফরের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করতে চাইছেন।