রাজনৈতিক প্রচারণায় স্বচ্ছতা এবং ভোটারদের অংশগ্রহণের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে বিলিয়নেয়ার ইলন মাস্ক এবং তার রাজনৈতিক সংগঠন আমেরিকা প্যাক (America PAC) একটি $১ মিলিয়ন ডলারের নির্বাচন লটারি আয়োজনের অভিযোগে অভিযুক্ত। এই ঘটনাটি ভোটারদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহের জন্য একটি প্রতারণামূলক কৌশল হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। Arizona-র বাসিন্দা জ্যাকুলিন ম্যাকফার্টি (Jacqueline McAferty) কর্তৃক দায়ের করা একটি মামলার মাধ্যমে এই ঘটনার সূত্রপাত, যা ২০২৪ সালের ৫ই নভেম্বর ফেডারেল আদালতে জমা দেওয়া হয়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে যে মাস্ক এবং আমেরিকা প্যাক ভোটারদের $১ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার জেতার সুযোগ দেওয়ার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করেছে। এই প্রচারণার অংশ হিসেবে ভোটারদের সংবিধান সমর্থনের জন্য পিটিশন স্বাক্ষর করতে বলা হয়েছিল। ম্যাকফার্টির দাবি, এই পুরস্কারের জন্য বিজয়ী নির্বাচন প্রক্রিয়াটি দৈবচয়নের ভিত্তিতে ছিল না, বরং এটি ছিল একটি প্রতারণামূলক তথ্য সংগ্রহের কৌশল, যা বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যগুলোতে (battleground states) পরিচালিত হয়েছিল। মাস্কের পক্ষ থেকে যুক্তি দেওয়া হয়েছিল যে এই অর্থ প্রদানগুলি মুখপাত্র ভূমিকার জন্য ছিল, পুরস্কার হিসেবে নয়। তবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডিস্ট্রিক্ট জজ রবার্ট পিটম্যান (Robert Pitman) রায় দিয়েছেন যে প্রচারণামূলক ভাষা ভোটারদের এটি একটি প্রকৃত লটারি বলে বিশ্বাস করার জন্য যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত। এই মামলাটি টেক্সাসের অস্টিনের ফেডারেল আদালতে চলবে।
অক্টোবর ২০২৪-এ, ফিলাডেলফিয়া ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির অফিসও মাস্ক এবং আমেরিকা প্যাককে সুইং স্টেটগুলোতে নিবন্ধিত ভোটারদের $১ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার প্রদান বন্ধ করার জন্য একটি মামলা দায়ের করে, যেখানে "অবৈধ লটারি পরিচালনা" করার অভিযোগ আনা হয়। এছাড়াও, উইসকনসিন ডেমোক্রেসি ক্যাম্পেইন (Wisconsin Democracy Campaign) নামক একটি নজরদারি গোষ্ঠী উইসকনসিনে মাস্ককে ভোটারদের অর্থ প্রদান থেকে বিরত রাখার জন্য একটি মামলা দায়ের করেছে। এটি ঘটেছিল যখন মাস্ক রাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন, যেখানে তার গোষ্ঠীগুলো তিনজন ভোটারকে $১ মিলিয়ন ডলারের চেক বিতরণ করে এবং পিটিশন স্বাক্ষরের জন্য $১০০ ডলার প্রণোদনা প্রদান করে। মাস্কের সমর্থিত প্রার্থী ২০ মিলিয়ন ডলারের বেশি ব্যয় সত্ত্বেও পরাজিত হন।
উইসকনসিনের মামলায় ভোট ঘুষ এবং অননুমোদিত লটারি সংক্রান্ত রাজ্য আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা একটি জন উপদ্রব এবং অবৈধ ষড়যন্ত্র বলে বিবেচিত হয়েছে। এই ঘটনাগুলি নির্বাচনী প্রচারণায় অর্থায়ন এবং ভোটারদের অংশগ্রহণের পদ্ধতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। বিশেষ করে, ভোটারদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের জন্য পুরস্কারের লোভ দেখানো নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সততা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এই মামলাগুলো নির্বাচনী স্বচ্ছতা এবং আইন মেনে চলার প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরেছে।