রাশিয়ান উস্কানি মোকাবেলায় ইইউ পূর্ব সীমান্তে 'অ্যান্টি-ড্রোন প্রাচীর' নির্মাণে সম্মত

সম্পাদনা করেছেন: Татьяна Гуринович

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রগুলো, বিশেষ করে পূর্ব সীমান্তে অবস্থিত দেশগুলো, রাশিয়ার উস্কানি মোকাবেলার জন্য একটি 'অ্যান্টি-ড্রোন প্রাচীর' নির্মাণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে সম্মত হয়েছে। এই উদ্যোগটি ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা কাঠামোর শক্তিশালীকরণের একটি বৃহত্তর কৌশলের অংশ, যেখানে উন্নত সনাক্তকরণ ও বাধা দেওয়ার ক্ষমতা, স্থল প্রতিরক্ষা, সামুদ্রিক নিরাপত্তা এবং মহাকাশ নজরদারির মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ইউক্রেন রাশিয়ার ড্রোনগুলোর বিরুদ্ধে তাদের অভিজ্ঞতার আলোকে এই প্রযুক্তিগত নকশায় অংশগ্রহণ করবে।

এই সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে শুক্রবার, ২৬শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে, বুলগেরিয়া, এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, পোল্যান্ড, রোমানিয়া, হাঙ্গেরি এবং স্লোভাকিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের মধ্যে একটি ভিডিও কনফারেন্সের পর। এই উদ্যোগটি ব্রাসেলস থেকে রাজনৈতিকভাবে পরিচালিত হবে এবং অক্টোবরে কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত অনানুষ্ঠানিক ইউরোপীয় কাউন্সিলে উপস্থাপন করা হবে। 'ভিজিল্যান্স অফ দ্য ইস্টার্ন ফ্ল্যাঙ্ক' নামে পরিচিত এই পরিকল্পনার চারটি প্রধান স্তম্ভ রয়েছে: উন্নত সনাক্তকরণ ও বাধা দেওয়ার ক্ষমতা সহ একটি অ্যান্টি-ড্রোন প্রাচীর, অ্যান্টি-মোবিলিটি সিস্টেম সহ স্থল প্রতিরক্ষা, বাল্টিক ও কৃষ্ণ সাগরে সামুদ্রিক নিরাপত্তা এবং মহাকাশ নজরদারি। এই উদ্যোগটি এক বছরের মধ্যে কার্যকর করার লক্ষ্য রাখা হয়েছে।

এই চুক্তির প্রেক্ষাপটে, ইউক্রেনীয় আকাশসীমায় হাঙ্গেরির ড্রোন অনুপ্রবেশের অভিযোগ এবং ইউক্রেন ও হাঙ্গেরির মধ্যে চলমান কূটনৈতিক উত্তেজনা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ইউক্রেন হাঙ্গেরির তিনটি সামরিক কর্মকর্তাকে নিষিদ্ধ করেছে, যা হাঙ্গেরির পূর্বে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের উপর নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়া। হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার সিজার্তো ইউক্রেনের ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের বিরোধিতা পুনর্ব্যক্ত করেছেন, ইউক্রেনের হাঙ্গেরীয়-বিরোধী নীতি এবং ড্রুজবা তেল পাইপলাইনের মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর উপর কথিত হামলার অভিযোগ তুলেছেন। উল্লেখ্য, হাঙ্গেরি তার অপরিশোধিত তেলের ৬৫% রাশিয়ার ড্রুজবা তেল পাইপলাইনের মাধ্যমে আমদানি করে।

ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা কমিশনার আন্দ্রিয়াস কুবিলিয়াস এই উদ্যোগের বিষয়ে বলেছেন যে এটি রাশিয়ার উস্কানি মোকাবেলায় এবং ইউরোপীয় প্রতিরক্ষা স্থাপত্যকে শক্তিশালী করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ইউক্রেন এই প্রযুক্তিগত নকশায় তাদের যুদ্ধক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেবে, যা তাদের রাশিয়ান ড্রোনগুলোর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মূল্যবান জ্ঞান সরবরাহ করবে। এই 'অ্যান্টি-ড্রোন প্রাচীর' উদ্যোগটি পূর্ব ইউরোপীয় ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে কৌশলগত ঐক্য এবং ইউক্রেনের সাথে অংশীদারিত্বের প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা রাশিয়ার হাইব্রিড হুমকি এবং আকাশসীমা লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে একটি সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রয়াস। এই উদ্যোগটি আগামী এক বছরের মধ্যে কার্যকর করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

উৎসসমূহ

  • Deutsche Welle

  • Euronews

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।