ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং মার্কিন বিশেষ দূত কিথ কেলগের মধ্যে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল রাশিয়ার সঙ্গে সম্ভাব্য শান্তি আলোচনা শুরু করা এবং একটি শান্তি চুক্তি সম্পাদনের কৌশল নির্ধারণ করা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য চাপ এবং দ্বিপাক্ষিক যোগাযোগের বৃদ্ধির ইঙ্গিত এই আলোচনাকে আরও তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলেছে।
তবে, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ সরাসরি জেলেনস্কির সাথে আলোচনার ভিত্তি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন, যা এই কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার জটিলতা তুলে ধরে। ল্যাভরভ পশ্চিমা দেশগুলোর বিরুদ্ধে শান্তি আলোচনা বাধাগ্রস্ত করার অভিযোগও করেছেন। তিনি মনে করেন, ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ শান্তি প্রক্রিয়া ব্যাহত করার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে, ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা মস্কোর বিরুদ্ধে আলোচনায় খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে অংশ নেওয়ার অভিযোগ করেছেন।
এই পরিস্থিতিতে, মার্কিন বিশেষ দূত কিথ কেলগের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেলগ, যিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল এবং মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের প্রাক্তন উপদেষ্টা, ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে পররাষ্ট্রনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তার অভিজ্ঞতা এবং কূটনৈতিক দক্ষতা এই জটিল পরিস্থিতিতে একটি কার্যকর সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে সহায়ক হতে পারে। ইউক্রেনের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য কেলগের কিয়েভ সফর এই কূটনৈতিক প্রচেষ্টার গুরুত্ব বাড়িয়েছে।
যুদ্ধবিরতি এবং শান্তি চুক্তির বিষয়ে এখনো অনেক অমীমাংসিত বিষয় রয়েছে। ইউক্রেন রাশিয়ার আগ্রাসন রোধে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চায়, যা যুদ্ধের অবসানের জন্য একটি পূর্বশর্ত। অন্যদিকে, রাশিয়া ক্রিমিয়া এবং পূর্ব ইউক্রেনের কিছু অঞ্চলের উপর তাদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে চায়। এই মৌলিক পার্থক্যগুলো শান্তি আলোচনাকে আরও কঠিন করে তুলেছে। তবে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই বিষয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণের আশা প্রকাশ করেছেন, যদি সরাসরি আলোচনা শুরু না হয়।
এই কূটনৈতিক তৎপরতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও প্রভাব ফেলেছে। নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী জোনাস গাহর স্টোরের কিয়েভ সফর এবং জার্মানির ভাইস চ্যান্সেলর লার্স ক্লিংবেইলের আলোচনায় অংশগ্রহণ ইউক্রেনকে সম্ভাব্য শান্তি প্রক্রিয়ায় সমর্থনের ইঙ্গিত দেয়। এই পরিস্থিতি ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণ, যেখানে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এবং মাঠ পর্যায়ের বাস্তবতা একে অপরের উপর প্রভাব ফেলছে।