ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা জোরদার করার লক্ষ্যে জার্মানি একটি নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এই উদ্যোগের আওতায় ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষা শিল্পের তৈরি হাজার হাজার দীর্ঘ-পাল্লার ড্রোন সরবরাহ করা হবে। জার্মান প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস লন্ডনে ইউক্রেন প্রতিরক্ষা যোগাযোগ গ্রুপের বৈঠকে এই তথ্য জানান।
এই প্রকল্পের অধীনে জার্মানি ইউক্রেনীয় সংস্থাগুলির সাথে ৩০০ মিলিয়ন ইউরো মূল্যের চুক্তি স্বাক্ষর করছে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো রাশিয়ার যুদ্ধযন্ত্রকে দেশের অভ্যন্তরে দুর্বল করে দেওয়া। পিস্টোরিয়াস জোর দিয়ে বলেন যে, জার্মানি ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে এবং রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাদের শক্তিশালী অবস্থানে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই ড্রোন সরবরাহ ইউক্রেনকে রাশিয়ার সামরিক অবকাঠামোতে দূরপাল্লার আঘাত হানার ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। জার্মানি এই উদ্যোগে অন্যান্য অংশীদারদেরও অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানিয়েছে, যা সহায়তার পরিধি আরও বিস্তৃত করতে পারে।
এর আগে জার্মানি ইউক্রেনকে আইরিস-টি (IRIS-T) আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং লিওপার্ড ১ (Leopard 1) ট্যাঙ্কের মতো বিভিন্ন সামরিক সহায়তা প্রদান করেছে। এই নতুন ড্রোন সরবরাহ ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করবে এবং চলমান সংঘাতে তাদের আরও ভালোভাবে সুরক্ষা দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, ইউক্রেনীয় ড্রোন প্রস্তুতকারক সংস্থা Ukrspecsystems যুক্তরাজ্যে একটি ২০ কোটি পাউন্ডের বিনিয়োগ প্রকল্প ঘোষণা করেছে। এই প্রকল্পের মধ্যে একটি কারখানা নির্মাণ এবং একটি পরীক্ষা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৫০০টি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং ২০২৬ সালের শুরু থেকে ড্রোন উৎপাদন শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এটি ইউক্রেনের যুদ্ধকালীন অভিজ্ঞতা এবং যুক্তরাজ্যের শিল্প ভিত্তির সমন্বয়ে বিশ্বব্যাপী একটি নেতৃস্থানীয় অবস্থানে পৌঁছানোর লক্ষ্য।
ইউক্রেন ইউরোপীয় দেশগুলির সাথে যৌথ ড্রোন উৎপাদন লাইন স্থাপনের পরিকল্পনাও করছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন যে, ডেনমার্কে প্রথম যৌথ ড্রোন উৎপাদন লাইন চালু হয়েছে এবং অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলিতেও এই ধরনের কর্মসূচি সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। এই উদ্যোগগুলি ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।