নাইজেরিয়া এবং ব্রাজিলের মধ্যে একটি ঐতিহাসিক দ্বিপাক্ষিক বিমান পরিষেবা চুক্তি (BASA) স্বাক্ষরিত হয়েছে, যা উভয় দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচলের পথ সুগম করেছে। নাইজেরিয়ার রাষ্ট্রপতি বোলা তিনুবু এবং ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভার উপস্থিতিতে এই চুক্তি সম্পাদিত হয়। এই চুক্তিটি কেবল বিমান চলাচলের ক্ষেত্রেই নয়, বরং কৃষি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলিতেও অংশীদারিত্বের নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে।
এই চুক্তির ফলে নাইজেরিয়ার এয়ার পিস (Air Peace) বিমান সংস্থাটি লাগোস থেকে সাও পাওলো এবং রিও ডি জেনিরো পর্যন্ত সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করবে। পূর্বে ইউরোপ বা মধ্যপ্রাচ্যের মাধ্যমে যাতায়াত করতে প্রায় ২০ ঘন্টা সময় লাগত, যা এখন প্রায় ৭ ঘন্টা কমে আসবে। এটি ব্যবসা, পর্যটন এবং সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের জন্য একটি বিশাল সুযোগ তৈরি করবে। এয়ার পিসের চেয়ারম্যান অ্যালেন ওনিয়েমা এই মাইলফলক অর্জনে রাষ্ট্রপতি তিনুবুর ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন যে, এই অংশীদারিত্ব উভয় দেশের জন্য অপার সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে।
এই বিমান চলাচল চুক্তিটি উভয় দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং পর্যটন বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। এছাড়াও, ব্রাজিল ও নাইজেরিয়ার মধ্যে প্রায় ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্য গত দশকে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে নেমে এসেছিল, যা এই চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে পুনরায় বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চুক্তি অনুযায়ী, ব্রাজিল কৃষিক্ষেত্রে প্রযুক্তি হস্তান্তর, আধুনিক কৃষি পদ্ধতি এবং টেকসই খাদ্য উৎপাদনে নাইজেরিয়াকে সহায়তা করবে। এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে প্রায় ১০,০০০ ট্রাক্টর এবং ৫০,০০০ কৃষি সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য ১.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি কৃষি যান্ত্রিকীকরণ কর্মসূচি (Green Imperative Partnership) বাস্তবায়িত হবে। এই পদক্ষেপগুলি নাইজেরিয়ার তরুণদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করবে।
এই ঐতিহাসিক চুক্তিটি কেবল বিমান চলাচলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে আরও গভীর করবে। উভয় দেশ বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, নবায়নযোগ্য শক্তি এবং ডিজিটাল উদ্ভাবনের মতো ক্ষেত্রেও সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হয়েছে। এই পদক্ষেপগুলি নাইজেরিয়া ও ব্রাজিলের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক এবং পারস্পরিক সমৃদ্ধির নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।