চীন ও ভারতের মধ্যে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য ও সংযোগের জন্য দশ-দফা ঐকমত্য

সম্পাদনা করেছেন: gaya ❤️ one

নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হওয়া চীন ও ভারতের মধ্যেকার বিশেষ প্রতিনিধিদের ২৪তম রাউন্ডের সংলাপে একটি যুগান্তকারী দশ-দফা ঐকমত্যে পৌঁছেছে উভয় দেশ। এই চুক্তি সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং জনগণের মধ্যে আদান-প্রদানকে নতুন মাত্রা দেবে। বছরের পর বছর ধরে চলা উত্তেজনা প্রশমনের পর এই অগ্রগতি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

এই চুক্তির আওতায়, পূর্ব ও মধ্য সেক্টরে সীমান্ত ব্যবস্থাপনার জন্য নতুন প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে। এছাড়াও, সীমান্ত নির্ধারণের জন্য একটি বিশেষজ্ঞ গোষ্ঠী গঠন করা হবে, যা 'আর্লি হারভেস্ট' নামে পরিচিত হবে। সামরিক উত্তেজনা প্রশমন এবং যোগাযোগ প্রোটোকল উন্নত করার বিষয়েও উভয় পক্ষ সম্মত হয়েছে।

বাণিজ্যিক দিক থেকে, সীমান্ত বাণিজ্য বাজারগুলি পুনরায় খোলা হবে। চীন ও ভারতের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল শীঘ্রই শুরু হবে এবং ভারতীয় তীর্থযাত্রীদের জন্য কৈলাস মানস সরোবর যাত্রা সম্প্রসারিত করা হবে। ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং গণমাধ্যমের মধ্যে আদান-প্রদান বৃদ্ধির ব্যাপারেও চুক্তি হয়েছে। এছাড়াও, দুই দেশ অভিন্ন নদীগুলির উপর সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে, যেখানে চীন জরুরি পরিস্থিতিতে জলবিজ্ঞান সংক্রান্ত তথ্য ভাগ করে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

এই বৈঠকের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, ভারত ও চীনের মধ্যেকার সম্পর্ককে স্থিতিশীল ও উন্নত করার জন্য একটি দশ-দফা ঐকমত্যে পৌঁছানো। এই চুক্তিটি কেবল সীমান্তেই শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনবে না, বরং অর্থনৈতিকভাবেও উভয় দেশকে উপকৃত করবে। বিগত বছরগুলোতে, বিশেষ করে ২০২০ সালের গালওয়ান উপত্যকার সংঘর্ষের পর থেকে দুই দেশের মধ্যেকার উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছিল। এই নতুন চুক্তি সেই উত্তেজনা প্রশমনে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তবে, লিপুলেখ পাসের ব্যবহার নিয়ে নেপালের আপত্তি এই চুক্তির একটি বিতর্কিত দিক। নেপাল সরকার জানিয়েছে যে লিপুলেখ তাদের অঞ্চলের অংশ এবং এই বিষয়ে ভারত ও চীনের মধ্যেকার চুক্তি তাদের সার্বভৌমত্বের উপর হস্তক্ষেপ। ভারত সরকার অবশ্য জানিয়েছে যে লিপুলেখ পাসের মাধ্যমে ভারত-চীন সীমান্ত বাণিজ্য ১৯৫৪ সাল থেকে চলে আসছে এবং এটি একটি ঐতিহাসিক বাণিজ্য পথ।

এই চুক্তিটি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ক্ষমতার ভারসাম্যের উপর গভীর প্রভাব ফেলবে। উভয় দেশই একটি জটিল বিশ্ব অর্থনীতিতে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করার জন্য এই সম্পর্ককে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে। এই চুক্তি বাস্তবায়নের সাফল্য নির্ভর করবে উভয় পক্ষের ধারাবাহিক প্রচেষ্টা এবং সহযোগিতার উপর।

উৎসসমূহ

  • indiandefensenews.in

  • Ten points of consensus for the 24th Round of Talks Between the Special Representatives of China and India on the Boundary Question

  • India, China agree to resume Mansarovar Yatra, border trade after talks in Beijing

  • India, China agree to reopen border trade; agree on new steps for boundary talks in boost to diplomatic ties

  • Land border trade, easier visas, direct flights: India and China warm ties with new deals

  • India-China Reset Ties: Agree on Border Peace, Flight Resumption, Kailash Pilgrimage Expansion and Trade Revival

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।