মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের বাণিজ্য অংশীদারদের মুদ্রা নীতি পর্যালোচনায় সুইজারল্যান্ডকে বিশেষ নজরে রেখেছে। ২০২৫ সালের বাণিজ্য পর্যালোচনার আগে, ডলারের বিপরীতে সুইস ফ্রাঙ্কের বিনিময় হার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ। এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হলো আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে একটি ন্যায্য প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করা এবং মুদ্রা বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা।
মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে আয়ারল্যান্ড এবং সুইজারল্যান্ডকে এই মুদ্রা পর্যবেক্ষণ তালিকায় যুক্ত করেছে। যদিও ২০২৪ সালে সুইজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে মুদ্রা কারসাজির কোনো নির্দিষ্ট অভিযোগ আনা হয়নি, তবে তাদের মুদ্রা বিনিময় নীতি, বিশেষ করে বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়ের মাধ্যমে সুইস ফ্রাঙ্কের মান নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টা, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে একটি অন্যায্য সুবিধা তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক (SNB) ঐতিহাসিকভাবে মুদ্রার মান নিয়ন্ত্রণে হস্তক্ষেপ করে আসছে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের কারণ হয়েছে।
এই পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের বাণিজ্য অংশীদারদের মুদ্রা নীতি এবং অর্থনৈতিক অভ্যাসের উপর আরও কঠোর নজরদারি চালাচ্ছে। সুইজারল্যান্ডের মতো একটি প্রধান আর্থিক কেন্দ্রকে এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা বিশ্বব্যাপী মুদ্রা বাজারের উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের ইঙ্গিত দেয়।
ঐতিহাসিকভাবে, সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক মুদ্রার অবমূল্যায়ন রোধ করতে এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে হস্তক্ষেপ করেছে। এই হস্তক্ষেপগুলি প্রায়শই সুইস ফ্রাঙ্কের শক্তিশালী হওয়ার প্রবণতাকে প্রতিহত করার জন্য করা হয়। যদিও এই পদক্ষেপগুলি দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির জন্য সহায়ক হতে পারে, তবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য অংশীদারদের, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের, কাছে এটি একটি অন্যায্য প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা হিসাবে বিবেচিত হতে পারে।
আগামী ২০২৫ সালের আগস্ট মাসে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সুইস স্টকগুলির উপর ৩৯% কর আরোপ করতে পারে বলে জানা গেছে, যা সুইস সরকারের জন্য একটি জরুরি বৈঠকের কারণ হতে পারে। এই সম্ভাব্য কর আরোপের বিষয়টি সুইজারল্যান্ডের অর্থনীতি এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্কের উপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। এই ঘটনাটি জাতীয় মুদ্রা নীতি এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্কের মধ্যে জটিল মিথস্ক্রিয়াকে আরও স্পষ্ট করে তোলে, যেখানে প্রধান অর্থনীতিগুলি তাদের নিজস্ব অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষার জন্য আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। এই পরিস্থিতি বিশ্বব্যাপী আর্থিক বাজারে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে এবং বাণিজ্য নীতি নিয়ে নতুন করে আলোচনার সূত্রপাত ঘটাতে পারে।