মার্কিন আমদানি পণ্যে ব্রাজিলের ৫০% শুল্ক আরোপ: বাণিজ্য উত্তেজনার মধ্যে এক নতুন অধ্যায়

সম্পাদনা করেছেন: gaya ❤️ one

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের উপর ৫০% শুল্ক আরোপের মাধ্যমে ব্রাজিল সরকার এক নতুন বাণিজ্য নীতি গ্রহণ করেছে। এই পদক্ষেপটি প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জাইর বলসোনারোর পূর্ববর্তী কিছু কর্মের প্রতিক্রিয়া হিসাবে দেখা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা এই অর্থনৈতিক কৌশলকে "নিজস্ব পরিচয়ে ব্রাজিল" (Brazil with its own identity) নামে অভিহিত করেছেন। এই নীতির অধীনে, স্থানীয় উৎপাদকদের জন্য ৩০ বিলিয়ন ব্রাজিলিয়ান রিয়াল (প্রায় ৫.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) সমমূল্যের কর ছাড়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই নতুন নীতির অংশ হিসেবে, ক্ষতিগ্রস্ত কোম্পানিগুলির জন্য কর পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। একই সাথে, ২০২৬ সালের শেষ পর্যন্ত মার্কিন কোম্পানিগুলির উপর ৫% কর আরোপ করা হয়েছে, যা পরবর্তীতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগগুলির (SMEs) ক্ষেত্রেও প্রসারিত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই পদক্ষেপগুলির মূল লক্ষ্য হলো ব্রাজিলের অভ্যন্তরীণ শিল্পকে শক্তিশালী করা এবং রপ্তানি বৃদ্ধিতে উৎসাহিত করা। ব্রাজিল সরকার ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগগুলির জন্য ৫ বিলিয়ন ব্রাজিলিয়ান রিয়াল (প্রায় ৯৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) কর প্রণোদনাও প্রদান করছে, যা ২০২৬ সালের শেষ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। এছাড়াও, বাতিল হওয়া অর্ডারগুলির জন্য বীমা কভারেজ সম্প্রসারিত করা এবং যে সকল পণ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা যাচ্ছে না, সেগুলির জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির মাধ্যমে ক্রয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা এই পরিস্থিতিকে ভয় বা উদ্বেগের কারণ হিসেবে না দেখে নতুন কিছু তৈরি করার সুযোগ হিসেবে দেখছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে ব্রাজিলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য যে কারণগুলি দেখানো হচ্ছে তা বৈধ নয়। এই বাণিজ্য উত্তেজনার মধ্যে, ব্রাজিল বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (WTO)-তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। এই ঘটনাটি বিশ্ব বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে দেশগুলির মধ্যে চলমান বাণিজ্য উত্তেজনা এবং সংরক্ষণবাদী নীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ। কোভিড-১৯ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ এবং অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক সমস্যা মোকাবিলার প্রচেষ্টার মধ্যে এই পদক্ষেপগুলি ব্রাজিলের বাণিজ্য ক্ষেত্রে একটি সংবেদনশীল সময়ে এসেছে। ব্রাজিলের এই পদক্ষেপগুলি কেবল অর্থনৈতিক নয়, বরং রাজনৈতিকভাবেও তাৎপর্যপূর্ণ। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বলসোনারোর বিচার প্রক্রিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এই শুল্ক আরোপের পিছনে একটি কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকেও ব্রাজিলের কর্মকর্তাদের উপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের খবর পাওয়া গেছে, যা দুই দেশের মধ্যেকার উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এই পরিস্থিতিতে, ব্রাজিল সরকার অভ্যন্তরীণ শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি নতুন বাজার অনুসন্ধানের উপরও জোর দিচ্ছে।

উৎসসমূহ

  • سكاي نيوز عربية

  • الجزيرة نت

  • يورونيوز

  • العربية نت

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।