মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৫ তারিখে মস্কোতে রাশিয়া এবং ইরান ছোট পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র (NPP) নির্মাণের জন্য একটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তিটি রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি কর্পোরেশন রোসাটম (Rosatom) এবং ইরানের শীর্ষ পারমাণবিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক শক্তি বিষয়ক উপ-সভাপতি মোহাম্মদ ইসলামি (Mohamad Eslami) দ্বারা স্বাক্ষরিত হয়। রোসাটম এই চুক্তিকে একটি "কৌশলগত প্রকল্প" হিসেবে বর্ণনা করেছে যা দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে।
ইরানের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০৪০ সালের মধ্যে ২০ গিগাওয়াট (GW) পারমাণবিক শক্তি ক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্যে আটটি ছোট পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। বর্তমানে, বিদ্যুৎ ঘাটতির সম্মুখীন ইরান কেবল একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনা করে, যা রাশিয়ার তৈরি বুশেহর (Bushehr) বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এর ক্ষমতা প্রায় ১ গিগাওয়াট (GW)। এই নতুন চুক্তিটি পারমাণবিক শক্তি খাতে রাশিয়া ও ইরানের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে এবং ইরানের ক্রমবর্ধমান শক্তির চাহিদা পূরণে সহায়তা করবে।
রোসাটমের প্রধান আলেক্সেই লিগাচেভ (Alexey Likhachev) এবং ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থার প্রধান মোহাম্মদ ইসলামি এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। ইসলামি পূর্বে জানিয়েছিলেন যে আটটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে, যার লক্ষ্য ২০৪০ সালের মধ্যে ২০ গিগাওয়াট পারমাণবিক শক্তি ক্ষমতা অর্জন করা। এই সহযোগিতা পারমাণবিক প্রযুক্তিতে ইরানের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
রাশিয়া পূর্বে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলের বোমা হামলার নিন্দা জানিয়েছিল, এই বলে যে তাদের লক্ষ্য ছিল তেহরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখা। ইরান অবশ্য এমন কোনো উদ্দেশ্য অস্বীকার করেছে। এই চুক্তিটি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং আন্তর্জাতিক পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ প্রচেষ্টার উপর কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে, উভয় দেশই শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পারমাণবিক শক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করার উপর জোর দিয়েছে। এই অংশীদারিত্ব উভয় দেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক এবং পারমাণবিক ক্ষেত্রে তাদের যৌথ অগ্রগতির একটি নিদর্শন।
এই চুক্তিটি ইরানের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি দেশটির পারমাণবিক প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও শিল্প বিকাশে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে উভয় দেশ পারমাণবিক শক্তি খাতে নিজেদের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করবে।