ইউক্রেন ২০২৫ সালের মধ্যে নিজস্ব মহাকাশ বাহিনী প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করছে

সম্পাদনা করেছেন: Татьяна Гуринович

ইউক্রেন সরকার ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ নিজস্ব মহাকাশ বাহিনী (Space Forces) প্রতিষ্ঠার জন্য একটি উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এই উদ্যোগটি দেশটির প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যার মধ্যে সাইবার প্রতিরক্ষা এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সমন্বয় সাধনও অন্তর্ভুক্ত। ইউক্রেনের মন্ত্রিসভা কর্তৃক জমা দেওয়া কার্যক্রম কর্মসূচির অংশ হিসেবে, এই মহাকাশ বাহিনী গঠনের লক্ষ্যমাত্রা ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৫ সালের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে।

এই পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য হলো সমন্বিত ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পাশাপাশি সাইবার এবং মহাকাশ সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। আশা করা হচ্ছে যে, ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ এই ক্ষেত্রগুলিতে অন্তত ৬০% কার্যক্ষমতা অর্জিত হবে। উপ-প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়েকেতেরিনা চেরনোগোরেঙ্কো মহাকাশের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেছেন যে, এটি ইউক্রেনের জন্য অত্যন্ত জরুরি। মহাকাশ বাহিনী ইউক্রেনকে শত্রুদের পরিকল্পনা সম্পর্কে রিয়েল-টাইম তথ্য সরবরাহ করবে এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিরুদ্ধে আগাম সতর্কতা দেবে, যা দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অপরিহার্য।

এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে, ইউক্রেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (EU) মহাকাশ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য একটি চুক্তি অনুমোদনের জন্য সংসদে একটি বিল জমা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। এর মাধ্যমে ইউক্রেন 'কোপারনিকাস', 'স্পেস ওয়েদার ইভেন্টস' এবং 'নিয়ার-আর্থ অবজেক্টস'-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ EU মহাকাশ কর্মসূচিতে যুক্ত হতে পারবে। এই সহযোগিতা ইউক্রেনের মহাকাশ প্রযুক্তির উন্নয়নে সহায়ক হবে।

বিশ্বব্যাপী মহাকাশ সামরিকীকরণের প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০১৯ সালে নিজস্ব স্পেস ফোর্স প্রতিষ্ঠা করেছে এবং ফ্রান্সও একই বছর তাদের বিমান ও মহাকাশ বাহিনী গঠন করেছে। এই প্রেক্ষাপটে, ইউক্রেনের এই পদক্ষেপটি বিশ্বব্যাপী সামরিক প্রবণতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। চীন ২০২২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বেশি সংখ্যক স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে, যা মহাকাশে তাদের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের ইঙ্গিত দেয়। রাশিয়াও মহাকাশ প্রতিরক্ষা খাতে একটি উল্লেখযোগ্য শক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়।

ইউক্রেনের এই মহাকাশ বাহিনী প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা দেশটির প্রতিরক্ষা সক্ষমতা আধুনিকীকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি কেবল জাতীয় নিরাপত্তাই জোরদার করবে না, বরং আন্তর্জাতিক মহাকাশ সহযোগিতায়ও ইউক্রেনের অবস্থানকে শক্তিশালী করবে। ২০২৬ সালের মধ্যে, ইউক্রেন সামরিক ক্ষেত্রে নতুন প্রযুক্তি, যেমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-ভিত্তিক সমাধান, ইলেকট্রনিক যুদ্ধ ব্যবস্থা এবং উন্নত মহাকাশ নজরদারি ও ডিজিটাল ভিজ্যুয়ালাইজেশন ব্যবস্থা একীভূত করার পূর্বাভাস দিয়েছে।

উৎসসমূহ

  • unn.ua

  • LB.ua

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।