হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মামলা: ইউক্রেন সহায়তার জন্য রাশিয়ার জব্দকৃত সম্পদ নিয়ে বিরোধ

সম্পাদনা করেছেন: Татьяна Гуринович

হাঙ্গেরি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) একটি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে লুক্সেমবার্গের কোর্ট অফ জাস্টিস অফ দ্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে (CJEU) একটি আইনি পদক্ষেপ নিয়েছে। এই সিদ্ধান্তটি জব্দকৃত রাশিয়ান সম্পদ থেকে প্রাপ্ত মুনাফা ইউক্রেনকে সহায়তা প্রদানের জন্য ব্যবহার করার বিষয়ে। হাঙ্গেরি এই মামলার মাধ্যমে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা প্রদানের জন্য রাশিয়ার জব্দকৃত সম্পদ থেকে অর্জিত অর্থের ৯৯.৭% ব্যবহারের ইইউ-এর সিদ্ধান্তকে বাতিল করার দাবি জানিয়েছে। হাঙ্গেরির অভিযোগ, এই সিদ্ধান্তটি সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সাথে পর্যাপ্ত পরামর্শ ছাড়াই এবং পদ্ধতিগত ত্রুটি সহকারে নেওয়া হয়েছে।

হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার সিজার্তো উল্লেখ করেছেন যে, হাঙ্গেরি একটি ছোট মধ্য ইউরোপীয় দেশ হিসেবে রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মতো প্রধান বিশ্বশক্তিগুলোর সাথে সম্মানজনক ও পারস্পরিক উপকারী সহযোগিতা বজায় রাখার নীতিতে বিশ্বাসী। তিনি ইউরোপীয় নেতাদের এই দেশগুলোর সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক সীমিত করার এবং তাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখার নীতির সমালোচনা করেছেন। হাঙ্গেরির সরকারের মতে, ইইউ-এর এই ধরনের সিদ্ধান্ত তাদের জাতীয় অর্থনীতি এবং নাগরিকদের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে যখন ইইউ-এর প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে।

এই মামলাটি জুলাই ২০২৫-এ দায়ের করা হয়েছিল এবং ২৫ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে আদালত এটি বিবেচনার জন্য গ্রহণ করে। যদিও এই আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে কয়েক বছর সময় লাগতে পারে, তবে চূড়ান্ত রায় না আসা পর্যন্ত বিতর্কিত সিদ্ধান্তগুলো কার্যকর থাকবে এবং ইউক্রেনের জন্য অর্থ প্রদান অব্যাহত থাকবে। এই ঘটনাটি রাশিয়ার জব্দকৃত সম্পদ ব্যবহার এবং ইউক্রেনকে সহায়তা প্রদানের বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বিদ্যমান বিভেদ ও ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিকে তুলে ধরেছে। এটি হাঙ্গেরির জাতীয় অর্থনৈতিক স্বার্থ এবং তার স্বতন্ত্র পররাষ্ট্র নীতি কৌশলের উপর জোর দেয়।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন কাউন্সিল মে ২০২৪-এ জব্দকৃত রাশিয়ান সম্পদ থেকে প্রাপ্ত মুনাফা ইউক্রেনকে সহায়তার জন্য ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। হাঙ্গেরির এই মামলাটি সেই সিদ্ধান্তের একটি প্রত্যক্ষ প্রতিক্রিয়া। হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার সিজার্তোর মন্তব্যগুলো দেশটির বৃহত্তর পররাষ্ট্র নীতি কৌশলের ইঙ্গিত দেয়, যেখানে তিনি প্রধান বিশ্বশক্তিগুলোর সাথে বাস্তবসম্মত আন্তর্জাতিক সহযোগিতার উপর জোর দেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের কিছু নীতির সমালোচনা করেন। এই বিরোধের মূল বিষয় হলো জব্দকৃত রাশিয়ান সম্পদ থেকে উদ্ভূত অর্থের বন্টন, যা ইউক্রেন এবং সংশ্লিষ্ট ইইউ সদস্য রাষ্ট্র উভয়ের জন্যই উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব ফেলে। এই ধরনের আইনি চ্যালেঞ্জগুলো ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভ্যন্তরীণ কার্যকারিতা এবং সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের অভাবকে নির্দেশ করে, যা আন্তর্জাতিক সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।

উৎসসমূহ

  • Рамблер

  • Meduza

  • Евроньюс

  • Газета.Ru

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।