যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর গত ১৬ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে গাজা উপত্যকার বাসিন্দাদের জন্য সকল ভিজিটর ভিসা স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে অল্প সংখ্যক চিকিৎসা ও মানবিক ভিসা ইস্যু করার পদ্ধতিতে একটি ব্যাপক পর্যালোচনা চলাকালীন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই স্থগিতাদেশটি এসেছে ডানপন্থী কর্মী লরা লোমারের সমালোচনার পর। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের আগমনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এটিকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে অভিহিত করেছেন। লোমার দাবি করেছেন যে, ফিলিস্তিনি শরণার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিমানবন্দরে প্রবেশ করছে। ওহিও-ভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা হিল প্যালেস্টাইন (Heal Palestine) গাজা থেকে ১৪৮ জনকে সরিয়ে এনেছে, যার মধ্যে ৬৩ জন আহত শিশু রয়েছে। এই ব্যক্তিরা আটলান্টা, বস্টন, ডালাস, গ্যালভেস্টন, ওকল্যান্ড, সান আন্তোনিও, সান জোসে এবং সিয়াটেলের মতো বিভিন্ন মার্কিন শহরে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হিল প্যালেস্টাইন এই পর্যন্ত ৬৩ জন আহত শিশুকে এবং মোট ১৪৮ জন বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিকে যুক্তরাষ্ট্রে সরিয়ে এনেছে। এই ভিসা স্থগিতাদেশটি ফিলিস্তিনিপন্থী গোষ্ঠী এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সমালোচনার মুখে পড়েছে। কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস (CAIR) এই পদক্ষেপকে "ইচ্ছাকৃত নিষ্ঠুরতা" বলে অভিহিত করেছে।
প্যালেস্টাইন চিলড্রেনস রিলিফ ফান্ড সতর্ক করেছে যে, এটি গাজায় আহত এবং গুরুতর অসুস্থ শিশুদের যুক্তরাষ্ট্রে অত্যাবশ্যকীয় চিকিৎসা পেতে বাধা দিতে পারে। অক্টোবর ২০২৩ থেকে সংঘাত শুরু হওয়ার পর গাজায় ৬১,০০০ এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার প্রেক্ষাপটে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে একটি গুরুতর মানবিক সংকট, যার মধ্যে ব্যাপক দুর্ভিক্ষ এবং অপুষ্টি রয়েছে, সে বিষয়ে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর গাজা বাসিন্দাদের জন্য চিকিৎসা ও মানবিক ভিসা ইস্যু করার পদ্ধতি পর্যালোচনার জন্য কত সময় লাগবে তা জানায়নি। এই পরিস্থিতির মধ্যে, প্রায় ৩,০০০ গাজার শিশু অপুষ্টির চিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে ইউনিসেফ জানিয়েছে, যা ইসরায়েলের চলমান অভিযানের কারণে হয়েছে। এই শিশুদের দ্রুত চিকিৎসা পুনরায় শুরু না হলে তারা গুরুতর অসুস্থতা এবং জীবন-হুমকির জটিলতার ঝুঁকিতে রয়েছে।