জাতিসংঘ ভেনিজুয়েলা থেকে উদ্ভূত অপরাধী সংগঠন 'ট্রেন ডি আরাগুয়া'-এর বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক হামলাকে তীব্রভাবে নিন্দা করেছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, সন্দেহভাজন মাদক ব্যবসায়ীদের সরাসরি হত্যা করা নিষিদ্ধ এবং এই ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড আইন অনুযায়ী তদন্ত ও বিচার করতে হবে।
জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক বেন সল, মরিস টিডবল-বিনজ এবং জর্জ ক্যাট্রুগালোস এক যৌথ বিবৃতিতে জানান যে, এই হামলাগুলি আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক আইনেরও লঙ্ঘন। তাদের মতে, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, বিনা প্ররোচনায় জাহাজে আক্রমণ করা নিষিদ্ধ এবং জাহাজ আটকের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট নীতি অনুসরণ করতে হয়, যেখানে সামরিক পদ্ধতির চেয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পদ্ধতিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
মার্কিন কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে যে 'ট্রেন ডি আরাগুয়া' ভেনিজুয়েলার নির্দেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একটি "অনুপ্রবেশ" সংগঠিত করছে। এই দাবির ভিত্তিতেই ২ সেপ্টেম্বর এবং ১৫ সেপ্টেম্বর দুটি পৃথক হামলায় মোট ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে, জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা এই দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ খুঁজে পাননি।
জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা আরও উল্লেখ করেছেন যে, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, সন্ত্রাসবাদ বা মাদক পাচার মোকাবিলার জন্য বিদেশে একতরফাভাবে শক্তি প্রয়োগের অনুমতি নেই। সংগঠিত অপরাধ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিদেশে হামলা চালানো সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন এবং জাতিসংঘের সনদ অনুযায়ী এটি অবৈধ শক্তি প্রয়োগের শামিল হতে পারে।
'ট্রেন ডি আরাগুয়া' ভেনিজুয়েলার একটি শক্তিশালী অপরাধী সংগঠন যা ২০১৪ সাল থেকে সক্রিয় এবং ল্যাটিন আমেরিকাজুড়ে এর বিস্তার ঘটেছে। এই সংগঠনটি মাদক পাচার, চাঁদাবাজি, অপহরণ, মানব পাচার এবং অন্যান্য গুরুতর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই সংগঠনটিকে একটি বিদেশী সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
জাতিসংঘের এই নিন্দা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে এবং তারা এই বিষয়ে একটি শান্তিপূর্ণ ও আইনসম্মত সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে।