জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় পশ্চিম তীরের মায়ে'লে আদুমিম বসতি এবং পূর্ব জেরুজালেমের মধ্যে হাজার হাজার নতুন আবাসন ইউনিট নির্মাণের ইসরায়েলের পরিকল্পনার নিন্দা জানিয়েছে। জাতিসংঘ বলেছে যে এই পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে এবং ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক উচ্ছেদের দিকে নিয়ে যেতে পারে, যা যুদ্ধাপরাধের সামিল। ইসরায়েলি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ এই বিতর্কিত বসতি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছেন, যার লক্ষ্য ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের ধারণাকে 'সমাধি দেওয়া'। এই পরিকল্পনার মধ্যে ৩,৪০১টি বাড়ি নির্মাণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এবং এটি দীর্ঘকাল ধরে নিষ্ক্রিয় থাকা E1 প্রকল্পকে পুনরুজ্জীবিত করেছে। এই প্রকল্পটি পশ্চিম তীরকে বিভক্ত করে পূর্ব জেরুজালেমকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলার সম্ভাবনা তৈরি করেছে, যা দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনাকে আরও ক্ষীণ করে তুলেছে।
পূর্ব জেরুজালেমের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত ১২ বর্গ কিলোমিটার E1 এলাকাটি খান আল-আহমার সহ বেশ কয়েকটি বেদুঈন সম্প্রদায়ের আবাসস্থল। প্রস্তাবিত বসতিটি পশ্চিম তীরকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপপুঞ্জে বিভক্ত করবে, যা দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের কার্যকারিতা আরও বিপন্ন করবে। প্রায় ৭ লক্ষ ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমের প্রায় ২৭ লক্ষ ফিলিস্তিনির মধ্যে বাস করছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় ইসরায়েলকে সমস্ত বসতি কার্যক্রম বন্ধ করার এবং অধিকৃত অঞ্চল থেকে বসতি স্থাপনকারীদের সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মূলত ১৯৬৭ সাল থেকে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের বসতি স্থাপন এবং দখলকে আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে অবৈধ বলে মনে করে। এই বসতি সম্প্রসারণ পশ্চিম তীরকে বিচ্ছিন্ন বিচ্ছিন্ন অঞ্চলে বিভক্ত করার জন্য সমালোচিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, যার মধ্যে জার্মানিও রয়েছে, এই E1 প্রকল্পকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কায়া কালাস এই পরিকল্পনাকে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের জন্য একটি বড় আঘাত হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এই পদক্ষেপটি আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনাকে আরও দূরে ঠেলে দেয়। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ইসরায়েলকে এই প্রক্রিয়া বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন, কারণ এটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের সম্ভাবনাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।