আজ, ২৫শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে, স্লোভেনিয়া ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে 'পার্সোনা নন গ্রাটা' বা অবাঞ্ছিত ব্যক্তি হিসেবে ঘোষণা করেছে। এর ফলে তিনি আর স্লোভেনিয়াতে প্রবেশ করতে পারবেন না। এই পদক্ষেপটি নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগের চলমান বিচার প্রক্রিয়ার পরিপ্রেক্ষিতে নেওয়া হয়েছে।
স্লোভেনিয়ার রাষ্ট্রীয় সচিব নেভা গ্রাসিক বলেছেন যে এই সিদ্ধান্ত ইসরায়েলি জনগণের বিরুদ্ধে নয়, বরং ইসরায়েলি সরকারের উদ্দেশ্যে একটি স্পষ্ট বার্তা বহন করে যে আন্তর্জাতিক আইন এবং মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। গ্রাসিক জুলাই ২০২৪ সালের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (ICJ) একটি উপদেষ্টামূলক মতামত উল্লেখ করেছেন, যেখানে অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের উপস্থিতি বেআইনি বলে রায় দেওয়া হয়েছিল। জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের স্বাধীন আন্তর্জাতিক কমিশন অফ ইনকোয়ারির ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সালের একটি প্রতিবেদনও বলেছে যে, গাজায় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম গণহত্যা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
এই ঘটনার পাশাপাশি, স্লোভেনিয়া ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের জন্য ১.২ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ১.৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) আর্থিক সহায়তার অনুমোদন দিয়েছে। এই অর্থায়ন ফ্রান্স, স্পেন, নরওয়ে এবং সৌদি আরবের একটি যৌথ উদ্যোগের অংশ, যার লক্ষ্য ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা। স্লোভেনিয়া জুন ২০২৪ সালে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পর থেকে দুই-রাষ্ট্র সমাধানের উদ্যোগে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছে এবং এই আর্থিক সহায়তা সেই রাজনৈতিক সমর্থনেরই প্রতিফলন।
স্লোভেনিয়া সরকারের এই পদক্ষেপগুলি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি অধিকার কমিটি অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে অবিলম্বে একটি আন্তর্জাতিকভাবে তত্ত্বাবধানে যুদ্ধবিরতি এবং ইসরায়েল কর্তৃক অবরোধ প্রত্যাহার ও সমস্ত বেআইনি পদক্ষেপ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে। এই ঘটনাগুলি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের উপর চলমান আন্তর্জাতিক আলোচনার গুরুত্ব তুলে ধরে। আন্তর্জাতিক মানবিক ও মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনের অভিযোগের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা একটি প্রধান কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে রয়ে গেছে। এই পদক্ষেপগুলি আন্তর্জাতিক বিচার ব্যবস্থার প্রতি শ্রদ্ধার প্রয়োজনীয়তা এবং সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টার উপর জোর দেয়।
এর আগে, জুলাই ২০২৫ সালে, স্লোভেনিয়া ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির এবং অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচকে 'পার্সোনা নন গ্রাটা' ঘোষণা করেছিল, তাদের সহিংসতায় উস্কানি এবং গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত করে। আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (ICJ) তার জুলাই ২০২৪ সালের মতামতে উল্লেখ করেছে যে ইসরায়েলের নীতি আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘন করে এবং রাষ্ট্রগুলির উচিত অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের অবৈধ উপস্থিতি স্বীকার বা সমর্থন না করা।