ভিসা-মুক্ত আফ্রিকা প্রচারের লক্ষ্যে ট্রান্স-আফ্রিকান ট্যুরিজম অ্যান্ড ইউনিটি ক্যাম্পেইন শুরু

সম্পাদনা করেছেন: Ирина iryna_blgka blgka

আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে ঐক্য ও ভিসা-মুক্ত ভ্রমণের প্রচারণার লক্ষ্যে ট্রান্স-আফ্রিকান ট্যুরিজম অ্যান্ড ইউনিটি ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে। ১৮ই আগস্ট, ২০২৫ তারিখে ঘানার আক্রা থেকে এই ১৬৩ দিনের যাত্রা শুরু হয়, যা ৪০,০০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ৩৯টি আফ্রিকান দেশ ভ্রমণ করবে। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো আফ্রিকান ইউনিয়নের ২০৩০ সালের মধ্যে ভিসা-মুক্ত আফ্রিকা গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়া এবং মহাদেশীয় ঐক্যকে শক্তিশালী করা। প্রাক্তন সংসদ সদস্য রাস মোবারকের নেতৃত্বে এই অভিযানটি ঘানা সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দ্বারা সমর্থিত।

প্যান-আফ্রিকানিজমের ঐতিহাসিক কেন্দ্র আক্রা থেকে এই যাত্রার সূচনা হয়, যা আফ্রিকান দেশগুলোর মধ্যে ভ্রমণ বাধা দূর করার গুরুত্ব তুলে ধরে। এই দীর্ঘ যাত্রাপথে ক্যামেরুন, অ্যাঙ্গোলা, দক্ষিণ আফ্রিকা, কেনিয়া, ইথিওপিয়া এবং মরক্কোর মতো দেশগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রতিটি দেশে কূটনৈতিক বৈঠক, সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান এবং ভিসা-মুক্ত নীতির পক্ষে প্রচারণার পরিকল্পনা করা হয়েছে, যার মাধ্যমে সরকার প্রধানদের কাছ থেকে নীতি গ্রহণের জন্য প্রতিশ্রুতি আদায় করার চেষ্টা করা হবে। এই ক্যাম্পেইনটি সরকারি ও বেসরকারি খাতের অংশীদারদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল। ঘানার চিফ অফ স্টাফের কার্যালয়, আফরিমেক্স গোল্ড, ন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক এবং অন্যান্য বিভিন্ন সংস্থা অর্থায়ন, জ্বালানি, টেলিযোগাযোগ এবং নাগরিক সমাজের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে তাদের সমর্থন প্রদান করছে। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক লক্ষ্যের পাশাপাশি, এই অভিযানটি একটি সাংস্কৃতিক অন্বেষণও বটে। এতে ঐতিহ্যবাহী পরিবেশনা এবং সম্প্রদায়ের সাথে মিথস্ক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যা আফ্রিকার অভিন্ন ঐতিহ্য এবং স্বতন্ত্র ঐতিহ্যকে তুলে ধরবে। এই উদ্যোগটি আফ্রিকান ইউনিয়নের এজেন্ডা ২০৬৩-এর সাথে সঙ্গতিপূর্ণ, যা মহাদেশ জুড়ে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং উদ্ভাবন বৃদ্ধির জন্য মানুষের অবাধ চলাচলকে উৎসাহিত করে। এই অভিযানটি মহাদেশীয় একীকরণের জন্য একটি তৃণমূল আন্দোলন হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করছে। এই উদ্যোগের সাফল্য নীতিগত অগ্রগতি এবং সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে পরিমাপ করা হবে। যদি ২০৩০ সালের মধ্যে ভিসা-মুক্ত আফ্রিকা বাস্তবায়িত হয়, তবে এই অভিযানটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হবে। এটি রাজনৈতিক প্রচারণা, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং অর্থনৈতিক কৌশলের এক শক্তিশালী সমন্বয়। ক্যাম্পেইনের নেতা রাস মোবারক এই পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেছেন, “২০৩০ সালের মধ্যে ভিসা-মুক্ত আফ্রিকা কেবল একটি স্বপ্ন নয়, এটি আমাদের মহাদেশের পর্যটন, বাণিজ্য এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ের সম্ভাবনাকে উন্মোচন করার জন্য অপরিহার্য।” মাত্র ১২ সদস্যের দলের ভিসা ফি বাবদ ১৪,০০০ মার্কিন ডলারের বেশি খরচ হওয়াটা এই প্রচারণার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক, যা মহাদেশ জুড়ে ভ্রমণের ক্ষেত্রে বিদ্যমান আমলাতান্ত্রিক বাধাগুলির একটি স্পষ্ট চিত্র তুলে ধরে। এই যাত্রা কেবল একটি ভৌগলিক ভ্রমণই নয়, বরং একটি ঐক্যবদ্ধ ও সহজলভ্য আফ্রিকার জন্য সম্মিলিত আকাঙ্ক্ষার একটি শক্তিশালী বার্তা।

উৎসসমূহ

  • Travel And Tour World

  • Visa Free Africa | African Union

  • Rwanda announces visa-free travel for all Africans as continent opens up to free movement of people

  • Unfree movement — why can’t Africans travel around Africa?

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।