নেপালের রাজনীতিতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। সুশীলা কার্কি দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন, যা কেবল একটি ঐতিহাসিক মুহূর্তই নয়, বরং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার এক নতুন আশার সঞ্চার করেছে। সম্প্রতি দেশে গণঅসন্তোষ, বাজারের অচলাবস্থা এবং পরিবহন ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটার পর এই নিয়োগ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কার্কি, যিনি একজন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের জন্য পরিচিত, তাঁর বিচারিক কর্মজীবনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ ছিলেন, যা তাঁকে জনগণের মধ্যে ব্যাপক শ্রদ্ধা এনে দিয়েছে।
বিশেষ করে, 'জেন-জি' নামে পরিচিত তরুণ প্রজন্মের আন্দোলন, যারা একটি দুর্নীতিমুক্ত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য সোচ্চার, তারা কার্কির নেতৃত্বে নতুন আশা দেখছে। এই তরুণ গোষ্ঠী বিশ্বাস করে যে কার্কির নিয়োগ একটি দুর্নীতিমুক্ত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে। নেপালের সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে এবং ২০২৬ সালের ৫ মার্চ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। কার্কির অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই সময়কালে জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার এবং নির্বাচনী সংস্কারের সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ভারত সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই পরিবর্তনকে স্বাগত জানিয়েছে এবং নেপালের শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতি ভারতের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সুশীলা কার্কিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং নেপালের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য ভারতের সমর্থনের কথা জানিয়েছেন।
সুশীলা কার্কির শিক্ষাগত যোগ্যতাও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় (BHU) থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তাঁর কর্মজীবন, আইন পেশা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ বিচারিক পদে অধিষ্ঠিত হওয়া পর্যন্ত, ন্যায়বিচার ও জনসেবার প্রতি তাঁর গভীর অঙ্গীকারের প্রমাণ দেয়। এই অভিজ্ঞতা তাঁকে দেশের বর্তমান জটিল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়ক হবে, বিশেষ করে দুর্নীতির মতো গভীর সমস্যা এবং তরুণ প্রজন্মের অসন্তোষ নিরসনে তাঁর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হবে। দেশবাসী আশা করছে যে তাঁর নেতৃত্বে নেপাল এক নতুন স্থিতিশীলতা ও সুশাসনের যুগে প্রবেশ করবে।