চার্চ অফ ইংল্যান্ডের ১৪০০ বছরের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে, সারাহ ম্যালিলি ক্যান্টারবেরির আর্চবিশপ হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। তিনি এই পদে আসীন হওয়া প্রথম মহিলা। মার্চ ২০২৬-এ ক্যান্টারবেরি ক্যাথেড্রালে তাঁর আনুষ্ঠানিক অভিষেক হবে। এই ঐতিহাসিক নিয়োগটি এসেছে জাস্টিন ওয়েলবির পদত্যাগের পর, যিনি জন স্মিথের শিশু নির্যাতনের অভিযোগ মোকাবিলায় তাঁর ভূমিকার জন্য সমালোচিত হয়েছিলেন। একটি স্বাধীন তদন্তে দেখা গেছে যে ২০১৩ সালের মধ্যে চার্চ অফ ইংল্যান্ড, ওয়েলবি সহ, স্মিথের অপব্যবহার সম্পর্কে অবগত ছিল কিন্তু যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি। ওয়েলবি ২০২৫ সালের জানুয়ারীতে পদত্যাগ করেন।
৬৩ বছর বয়সী ম্যালিলি, যিনি ২০১৮ সাল থেকে লন্ডনের বিশপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি তাঁর নার্সিং পেশা এবং মানবতাবাদী কাজের জন্য পরিচিত। তাঁর এই নিয়োগ গির্জার সংস্কার এবং আধুনিকীকরণের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তিনি এর আগে ইংল্যান্ডের চিফ নার্সিং অফিসার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন, এবং ৩৭ বছর বয়সে ইংল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধান নার্স হয়েছিলেন, যা তাঁকে প্রশাসনিক ও নেতৃত্বমূলক কাজে বিশেষ অভিজ্ঞতা দিয়েছে। ম্যালিলি তাঁর নতুন দায়িত্ব গ্রহণের বিষয়ে বলেন যে তিনি ঈশ্বরের উপর আস্থা রেখে এই গুরুদায়িত্ব পালন করবেন।
চার্চ অফ ইংল্যান্ডের এই নিয়োগ প্রক্রিয়াটি ক্রাউন নমিনেশন কমিশন দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল, যেখানে গির্জা এবং বিশ্বব্যাপী অ্যাংলিকান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। রাজা তৃতীয় চার্লস ম্যালিলির মনোনয়ন অনুমোদন করেছেন, যাকে ক্রিসমাসের আগে ক্যান্টারবেরি ক্যাথেড্রালের ক্যাননদের কলেজ আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচিত করবে। তাঁর নির্বাচন ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে সেন্ট পলস ক্যাথেড্রালে নিশ্চিত করা হবে। প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ম্যালিলির নিয়োগকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং জাতীয় জীবনে তাঁর ভূমিকার উপর জোর দিয়েছেন। ঐতিহাসিকভাবে, ক্যান্টারবেরির আর্চবিশপ পদটি সেন্ট অগাস্টিন ৫৯৭ সালে রোম থেকে আসার পর থেকে বিদ্যমান। এই পদটি গির্জার আধ্যাত্মিক ও প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে বিবেচিত হয়।
ম্যালিলি, যিনি একজন বিশপ হিসেবেও কাজ করেছেন, তিনি এই পদে আসীন হওয়া প্রথম মহিলা, যা গির্জার লিঙ্গ সমতার দিকে একটি বড় অগ্রগতি নির্দেশ করে। এই নিয়োগের প্রেক্ষাপটে, চার্চ অফ ইংল্যান্ড বর্তমানে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। এর মধ্যে রয়েছে ধর্মীয় বিশ্বাসে পতন, আর্থিক সমস্যা এবং অভ্যন্তরীণ সংস্কারের আহ্বান। ম্যালিলির নেতৃত্ব এই চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলা করতে এবং গির্জার ভবিষ্যৎ পথনির্দেশ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তাঁর নার্সিং পটভূমি এবং প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি তাঁকে এই জটিল সময়ে গির্জাকে পরিচালনা করতে সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।