সাম্প্রতিক রাশিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘনের ঘটনা এবং ইউক্রেন সংলগ্ন অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে পোল্যান্ড তার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। এই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে, পোল্যান্ড এবং ন্যাটো জোটের মিত্ররা তাদের আকাশসীমা টহল বাড়িয়েছে। এই ঘটনাগুলি ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার চলমান বিমান হামলা এবং সদস্য রাষ্ট্রগুলির আকাশসীমায় সম্ভাব্য অনুপ্রবেশের উদ্বেগের মধ্যে ঘটেছে।
অক্টোবর ৫, ২০২৫-এ, পোলিশ সামরিক বাহিনী তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সর্বোচ্চ প্রস্তুতি ঘোষণা করে। এর মধ্যে রয়েছে পোলিশ এবং মিত্র বিমানগুলির আকাশসীমা টহল বৃদ্ধি এবং ভূমি-ভিত্তিক আকাশ প্রতিরক্ষা ও রাডার নজরদারি ব্যবস্থার উচ্চতর সতর্কতা। এই পদক্ষেপগুলি রাশিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘনের প্রতিক্রিয়ায় নেওয়া হয়েছে, যা ইউক্রেন যুদ্ধের নিরাপত্তা পরিস্থিতির সঙ্গে সম্পর্কিত। এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে, ন্যাটো জোট তাদের পূর্ব সীমান্তে নজরদারি ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করেছে।
ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটে বলেছেন যে জোটের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়েছে এবং ন্যাটোর ভূখণ্ডের প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করেছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে রাশিয়াকে অবশ্যই বুঝতে হবে যে ন্যাটো এবং এর মিত্ররা আন্তর্জাতিক আইন মেনে নিজেদের রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল সামরিক ও অসামরিক উপায় ব্যবহার করবে। পোল্যান্ড উত্তর আটলান্টিক চুক্তির ৪ অনুচ্ছেদের অধীনে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে।
সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৫-এ, প্রায় ২০টি রাশিয়ান ড্রোন পোল্যান্ডের আকাশসীমায় প্রবেশ করেছিল, যা একটি বড় ধরনের ঘটনা ছিল। এই ঘটনায় পোলিশ বিমান বাহিনী এবং অন্যান্য ন্যাটো সামরিক বাহিনী দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল। ডাচ এফ-৩৫ বিমানগুলি এই ড্রোনগুলির মধ্যে কয়েকটি ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়েছিল, যা ন্যাটোর জন্য একটি ঐতিহাসিক ঘটনা ছিল। এই পরিস্থিতিতে, ন্যাটো জোট তাদের পূর্ব সীমান্তে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য 'ইস্টার্ন সেন্ট্রি' নামে একটি অভিযান শুরু করেছে।
এই অভিযানের অংশ হিসেবে, এছাড়াও, ইতালির এডব্লিউএসিএস (AWACS) নজরদারি বিমান, ন্যাটো মাল্টি-রোল ট্যাঙ্কার বিমান এবং জার্মান প্যাট্রিয়ট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এই প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপে সহায়তা করছে।
পোল্যান্ড এবং ইউক্রেনের মধ্যে প্রায় ৫৩০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। রাশিয়ার এই ধরনের কর্মকাণ্ডকে একটি বড় উস্কানি হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে। ন্যাটো জোট এই ঘটনাগুলির উপর নজর রাখছে এবং সদস্য রাষ্ট্রগুলির সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। এই ক্রমবর্ধমান উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে, কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এবং সম্মিলিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে।