কোপেনহেগেনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের বৈঠক: রাশিয়ার হাইব্রিড যুদ্ধ হুমকির মোকাবিলা

সম্পাদনা করেছেন: gaya ❤️ one

ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান হাইব্রিড যুদ্ধ হুমকির মোকাবিলায় কৌশল নির্ধারণের জন্য ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে 30 সেপ্টেম্বর 2025 তারিখে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। সম্প্রতি ডেনমার্কের আকাশসীমায় ড্রোন হামলার ঘটনা এবং সামরিক ঘাঁটির কাছাকাছি সন্দেহজনক উড়ন্ত বস্তু শনাক্ত হওয়ার পর এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ডেনিশ প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন তিনি রাশিয়ার আগ্রাসন প্রতিহত করার জন্য ঐক্যবদ্ধ ও সতর্ক পদক্ষেপের উপর জোর দেন।

কোপেনহেগেন বিমানবন্দর এবং অন্যান্য সামরিক স্থাপনার কাছে ড্রোন দেখা যাওয়ার পর ডেনমার্ক 29 সেপ্টেম্বর থেকে 3 অক্টোবর পর্যন্ত তার আকাশসীমায় বেসামরিক ড্রোন চলাচল নিষিদ্ধ করেছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা হাইব্রিড যুদ্ধের প্রকৃতি এবং এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ও প্রতিরক্ষা জোরদার করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন। হাইব্রিড যুদ্ধ হলো প্রচলিত সামরিক কৌশলের সাথে সাইবার আক্রমণ, তথ্য বিকৃতি এবং অন্যান্য অপ্রচলিত পদ্ধতির সমন্বিত ব্যবহার।

এই সম্মেলনে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ রাশিয়ার বিরুদ্ধে সতর্কতার সাথে অগ্রসর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে আগ্রাসন প্রতিরোধ করা যায় কিন্তু উত্তেজনা এড়ানো যায়। অন্যদিকে, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া এড়িয়ে শান্ত ও পরিমিত পদক্ষেপের পরামর্শ দিয়েছেন। সম্মেলনের মূল সিদ্ধান্ত ছিল যে, সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ঐক্য ও প্রস্তুতি বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি।

ডেনমার্ক সম্প্রতি তার বিমানবন্দর এবং সামরিক ঘাঁটিগুলিতে ড্রোন দেখা যাওয়ার ঘটনাগুলির পর বিশেষ রাডার ব্যবস্থা স্থাপন করেছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন এবং যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলি ডেনমার্কের সাথে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদানে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেছেন। তারা বিশ্বাস করেন যে, রাশিয়া ইউরোপের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় হুমকি। এই সম্মেলনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়। এই পদক্ষেপগুলি ইউরোপের নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টার অংশ।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা ইউক্রেনকে সহায়তা করার জন্য জব্দকৃত রাশিয়ান সম্পদ ব্যবহারের বিষয়টিও আলোচনা করেছেন, তবে এই বিষয়ে মতভেদ ছিল। জার্মানি ইউক্রেনকে ভবিষ্যতের ক্ষতিপূরণের বিনিময়ে ঋণ দেওয়ার ধারণাকে সমর্থন করলেও, ফ্রান্স, বেলজিয়াম এবং লুক্সেমবার্গ এই পদক্ষেপের বৈধতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিস্থিতিও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল, যা ইউরোপে পারমাণবিক নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুতর হুমকি তুলে ধরে।

উৎসসমূহ

  • Al Jazeera Online

  • The Washington Post

  • The Economic Times

  • Tomorrow's Affairs

আপনি কি কোনো ত্রুটি বা অসঠিকতা খুঁজে পেয়েছেন?

আমরা আপনার মন্তব্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিবেচনা করব।