মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর উপস্থিতি বৃদ্ধি এবং ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রতিক্রিয়ায়, ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রপতি নিকোলাস মাদুরো বেসামরিক নাগরিকদের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ এবং বৃহত্তর সামরিক মহড়ার আয়োজন করেছেন। এই পদক্ষেপগুলি জাতীয় প্রতিরক্ষা এবং সার্বভৌমত্ব জোরদার করার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে।
সেপ্টেম্বর ২০২৫-এর মাঝামাঝি সময়ে, হাজার হাজার ভেনেজুয়েলার নাগরিক, যাদের মধ্যে ছাত্র এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাও ছিলেন, তারা মিলিশিয়াতে যোগ দিয়ে অস্ত্র পরিচালনা এবং "বিপ্লবী প্রতিরোধ" কৌশল সম্পর্কে নির্দেশনা লাভ করেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ভ্লাদিমির পাদরিন লোপেজ ১৭-১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ পর্যন্ত লা অর্কিলা দ্বীপে সামরিক মহড়ার ঘোষণা করেন, যেখানে ২,৫০০ এর বেশি সৈন্য, ১২টি যুদ্ধজাহাজ, ২২টি বিমান এবং ২০টি মিলিশিয়া জাহাজ অংশ নেয়। এই মহড়াগুলিতে অবতরণ অনুশীলন, আকাশ প্রতিরক্ষা, ড্রোন পরিচালনা, ইলেকট্রনিক যুদ্ধ এবং বিশেষ বাহিনীর মিশন অন্তর্ভুক্ত ছিল। এছাড়াও, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে, কারাকাসের পেটেরের মতো সম্প্রদায়গুলিতে সামরিক প্রশিক্ষণ সেশন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বাসিন্দাদের অস্ত্র ব্যবস্থা এবং প্রতিরক্ষা কৌশল পরিচালনা করার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। একজন বেসামরিক অংশগ্রহণকারী, লুসবী মন্তেরোলা, তার দেশের প্রতিরক্ষার জন্য তার প্রেরণা প্রকাশ করেন।
এই ঘটনাগুলি ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে চলমান ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং অনুভূত বাহ্যিক হুমকির প্রতিক্রিয়ায় একটি জাতির বেসামরিক জনগণকে প্রতিরক্ষার জন্য সংগঠিত করার কৌশলগত প্রভাবগুলির কারণে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। ভেনেজুয়েলার সরকার এই উদ্যোগগুলিকে এই অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর উপস্থিতি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়া হিসাবে দেখছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগস্ট ২০২৫ থেকে মাদক পাচার মোকাবেলার ঘোষিত লক্ষ্য নিয়ে ক্যারিবিয়ান সাগরে নৌবাহিনীর উপস্থিতি বৃদ্ধি করেছে। এই অপারেশনের অংশ হিসাবে, ২ সেপ্টেম্বর একটি মার্কিন হামলায় ভেনেজুয়েলা থেকে আসা একটি নৌকা ডুবে যায়, যেখানে ১১ জন নিহত হয়। বিশেষজ্ঞরা এই অপারেশনের আসল লক্ষ্য নিয়ে জল্পনা করেছেন, যা ভেনেজুয়েলার মাদুরো সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করার একটি সম্ভাব্য উদ্দেশ্য বলে মনে করেন। এই নৌবহরটি ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম সামরিক শক্তি প্রদর্শনগুলির মধ্যে একটি, যা ১৯৬২ সালের পর থেকে এই অঞ্চলে সবচেয়ে বড় মার্কিন সামরিক উপস্থিতি।
এই ঘটনাগুলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভেনেজুয়েলার মধ্যে সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলেছে, যেখানে সামরিক মহড়াগুলি কূটনৈতিক আলোচনার চেয়ে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠেছে।