একটি বিরল মার্কিন-ইরান সহযোগিতা চুক্তির অংশ হিসেবে, ট্রাম্প প্রশাসন ১২০ জন ইরানি নাগরিককে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। এই নাগরিকরা অবৈধভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন। এটি প্রায় ৪০০ ইরানিকে ফেরত পাঠানোর একটি বৃহত্তর পরিকল্পনার প্রথম ধাপ। সোমবার রাতে লুইসিয়ানা থেকে একটি বিশেষ ফ্লাইটে এই ১২০ জনকে পাঠানো হয় এবং মঙ্গলবার কাতারের মাধ্যমে ইরানে পৌঁছানোর কথা ছিল।
এই ঘটনাটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর অভিবাসন নীতির একটি উল্লেখযোগ্য প্রয়োগ। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংসদ বিষয়ক মহাপরিচালক হোসেইন নৌশাবাদি জানিয়েছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ প্রায় ৪০০ ইরানিকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাদের বেশিরভাগই অবৈধভাবে, বিশেষ করে মেক্সিকোর মাধ্যমে প্রবেশ করেছিলেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, প্রথম ধাপে ১২০ জনকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। কিছু ফেরত আসা ব্যক্তির বৈধ রেসিডেন্সি পারমিট থাকা সত্ত্বেও তাদের এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যদিও তাদের সম্মতি নেওয়া হয়েছিল।
এই নির্বাসন চুক্তিটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের মধ্যে কয়েক মাস আলোচনার পর সম্পন্ন হয়েছে, যা দুই দেশের ঐতিহাসিক উত্তেজনার মধ্যে একটি বিরল ঘটনা। এই সহযোগিতা এমন এক সময়ে এসেছে যখন সম্প্রতি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলিতে বিমান হামলার ঘটনা ঘটেছিল। মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, এই নির্বাসিত ব্যক্তিদের বেশিরভাগের অ্যাসাইলাম আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে অথবা তাদের আবেদন শুনানির জন্য এখনও বিচারকের সামনে হাজির করা হয়নি। তবে, কিছু ব্যক্তি দীর্ঘ সময় আটকের পর স্বেচ্ছায় দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই নির্বাসন প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, কারণ ইরানে ফিরে যাওয়া ব্যক্তিদের সম্ভাব্য নিপীড়নের শিকার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যদিও ইরানি কর্মকর্তারা আশ্বাস দিয়েছেন যে, ফেরত আসা ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে এবং তাদের কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না, তবুও অনেক নির্বাসিত ব্যক্তি অসন্তুষ্ট এবং ভীত বলে জানা গেছে। এই ঘটনাটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে কঠোর নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এর আগে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি পৃথক চুক্তির অধীনে ইরান সহ বিভিন্ন দেশ থেকে অভিবাসীদের পানামায় ফেরত পাঠিয়েছিল।
এই নির্বাসন প্রক্রিয়াটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেছে, যেখানে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা সত্ত্বেও নির্দিষ্ট স্বার্থ পূরণের জন্য সহযোগিতার পথ তৈরি হতে পারে।