মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রত্যাবাসিত পশ্চিম আফ্রিকার নাগরিকদের গ্রহণ করার জন্য ঘানা একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট জন ড্রামানি মাহামার সরকার এই পদক্ষেপের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কাজ করছে। সম্প্রতি, ১৪ জন পশ্চিম আফ্রিকান নাগরিক, যাদের মধ্যে নাইজেরিয়ান এবং একজন গাম্বিয়ান রয়েছেন, ঘানায় পৌঁছেছেন এবং তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট জন ড্রামানি মাহামা জানিয়েছেন যে, ঘানা এই চুক্তিতে সম্মত হয়েছে কারণ পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর নাগরিকদের ঘানায় প্রবেশের জন্য ভিসার প্রয়োজন হয় না, যা আঞ্চলিক অবাধ চলাচল নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের নীতিমালার অংশ হিসেবে তৃতীয় দেশগুলিতে নাগরিকদের ফেরত পাঠাচ্ছে এবং ঘানা এই প্রক্রিয়ায় সহায়তা করছে। এই পদক্ষেপটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতির একটি অংশ, যা অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে জোর দিচ্ছে।
ঘানার এই সিদ্ধান্তটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা, কারণ এটি আফ্রিকার দেশগুলির মধ্যে অভিবাসন সংক্রান্ত সহযোগিতার একটি নতুন দিক উন্মোচন করেছে। এর আগে, রুয়ান্ডা, দক্ষিণ সুদান এবং এসোয়াতিনি-র মতো দেশগুলিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে অনুরূপ চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছে। জুলাই মাসে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এসোয়াতিনিতে পাঁচজন এবং দক্ষিণ সুদানে আটজন অভিবাসীকে ফেরত পাঠিয়েছে। আগস্ট মাসে, রুয়ান্ডা সাতজন প্রত্যাবাসিত নাগরিককে গ্রহণ করেছে।
এই চুক্তির ফলে ঘানা-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে কিছু টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট মাহামা স্বীকার করেছেন যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে একটি পরিবর্তন এসেছে, যার মধ্যে মার্কিন শুল্ক বৃদ্ধি এবং ঘানার নাগরিকদের জন্য ভিসা বিধিনিষেধ অন্তর্ভুক্ত। তবে, তিনি সম্পর্ককে ইতিবাচক হিসেবেই বর্ণনা করেছেন। অন্যদিকে, নাইজেরিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই ধরনের তৃতীয় দেশীয় অভিবাসী গ্রহণের প্রস্তাবে দৃঢ়ভাবে বিরোধিতা করেছে। নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইউসুফ তুগ্গার জুলাই মাসে বলেছিলেন যে, জাতীয় নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক উদ্বেগের কারণে ফেডারেল সরকার নাইজেরিয়ার বাইরের প্রত্যাবাসিতদের গ্রহণ করবে না।
এই পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক অভিবাসন নীতি এবং তৃতীয় দেশগুলিতে প্রত্যাবাসনের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা তুলে ধরে। ঘানার এই পদক্ষেপ আঞ্চলিক অভিবাসন নীতিগুলির উপর একটি বৃহত্তর প্রভাব ফেলতে পারে এবং অন্যান্য দেশগুলিকেও অনুরূপ পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করতে পারে। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলি অবশ্য প্রত্যাবাসিতদের নিরাপত্তা এবং তাদের নতুন পরিবেশে টিকে থাকার চ্যালেঞ্জ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।