লেবানন সরকার হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করছে, যা আগামী ৩১শে আগস্ট, ২০২৫-এর মধ্যে উপস্থাপিত হবে। এই উদ্যোগটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় একটি শান্তি চুক্তির অংশ, যার লক্ষ্য হলো লেবাননের অভ্যন্তরে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে নিরস্ত্র করা। পরিকল্পনাটি সামরিক পদক্ষেপের পরিবর্তে অহিংস উপায়ে হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্রীকরণের জন্য উৎসাহিত করার উপর জোর দেবে।
ইসরায়েল দক্ষিণ লেবাননে তাদের সামরিক উপস্থিতি কমাতে প্রস্তুত যদি লেবাননের সশস্ত্র বাহিনী হিজবুল্লাহর অস্ত্রশস্ত্রের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই সিদ্ধান্তকে লেবাননের সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হিসেবে দেখেছেন। তবে, হিজবুল্লাহর নেতা নাঈম কাসেম এই পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি লেবানন সরকারকে ইসরায়েলের স্বার্থে কাজ করার অভিযোগ করেছেন এবং সম্ভাব্য গৃহযুদ্ধের সতর্কবার্তা দিয়েছেন। কাসেম বলেছেন যে হিজবুল্লাহ এই পরিকল্পনাকে উপেক্ষা করবে।
লেবাননের মন্ত্রিসভা মার্কিন প্রস্তাবের উদ্দেশ্যগুলো অনুমোদন করেছে, যার মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রবহির্ভূত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ধীরে ধীরে অবসান এবং ইসরায়েলের দক্ষিণ লেবানন থেকে প্রত্যাহার। যদিও পরিকল্পনার বিস্তারিত বিষয়গুলো এখনও আলোচনার অধীনে রয়েছে।
সৌদি আরব এবং কাতার নিরস্ত্রীকৃত হিজবুল্লাহ সদস্য এবং সমর্থকদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে দক্ষিণ লেবাননে একটি নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে। এই বিনিয়োগের পরিমাণ এখনও নির্দিষ্ট করা হয়নি, তবে এটি একটি বৃহত্তর আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এই কূটনৈতিক প্রচেষ্টাটি একটি জটিল ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হিজবুল্লাহর নিরস্ত্রীকরণের সম্ভাবনা লেবাননের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি এবং বৃহত্তর মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তার উপর গভীর প্রভাব ফেলবে। যদিও হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে প্রত্যাখ্যান এবং গৃহযুদ্ধের সতর্কবার্তা এই উদ্যোগের পথে বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে, তবুও সৌদি আরব ও কাতারের মতো দেশগুলোর অর্থনৈতিক সহায়তার প্রস্তাব একটি সমন্বিত সমাধানের ইঙ্গিত দেয়। এই পরিস্থিতি একটি সূক্ষ্ম এবং জটিল আলোচনার পথ নির্দেশ করে, যেখানে পরিকল্পনার চূড়ান্ত সাফল্য এখনও অনিশ্চিত।