জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গাজা শহরে ইসরায়েলের পরিকল্পিত সামরিক অভিযান চলাকালীন অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। জাপানে অনুষ্ঠিত টোকিও আফ্রিকা উন্নয়ন সম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানান।
গুতেরেস বলেন, গাজা শহরে ইসরায়েলের এই সামরিক অভিযান ব্যাপক প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞের কারণ হবে, যা এড়াতে জরুরি ভিত্তিতে যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে গাজা শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য সামরিক অভিযান শুরুর প্রথম পদক্ষেপ নেওয়ার পর গুতেরেস এই মন্তব্য করেন। ইসরায়েল এই অভিযানের জন্য হাজার হাজার রিজার্ভ সেনা তলব করেছে। এই অভিযানটি গাজার বৃহত্তম শহুরে কেন্দ্রকে লক্ষ্য করে পরিচালিত হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচিত হয়েছে এবং আরও ফিলিস্তিনিকে বাস্তুচ্যুত করার সম্ভাবনা রয়েছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব হামাস কর্তৃক জিম্মি সকল বন্দীর নিঃশর্ত মুক্তিরও দাবি জানান। একই সাথে তিনি পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের অবৈধ বসতি সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। গত সপ্তাহে ঘোষিত এই বসতি সম্প্রসারণ পরিকল্পনা পশ্চিম তীরকে বিভক্ত করবে এবং পূর্ব জেরুজালেমের সাথে এর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করবে বলে মনে করা হচ্ছে। ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই নির্মাণ কাজ ওই এলাকার ফিলিস্তিনি সম্প্রদায়গুলোকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে এবং দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনাকে নষ্ট করবে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুসারে, ৭ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৬০,০০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এই সংঘাতের সূত্রপাত হয়েছিল ৭ অক্টোবর, যখন হামাস জঙ্গিরা দক্ষিণ ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থানে আক্রমণ চালিয়েছিল, যার ফলে প্রায় ১,২০০ মানুষ নিহত হয়েছিল, যাদের অধিকাংশই ছিল বেসামরিক নাগরিক এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
জাতিসংঘের মহাসচিবের এই আহ্বান এমন এক সময়ে এসেছে যখন গাজায় মানবিক সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং সকল পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছে।