গাজা সিটিতে একটি বড় ধরনের সামরিক অভিযানের জন্য ইসরায়েল ৬০,০০০ রিজার্ভ সৈন্যকে একত্রিত করেছে। এই পদক্ষেপটি যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলাকালীন একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় নির্দেশ করে। হামাস একটি ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে জিম্মি ও বন্দি বিনিময় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে, ইসরায়েল এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) গাজা সিটির অভ্যন্তরে এবং এর আশেপাশে একটি পর্যায়ক্রমিক, সুনির্দিষ্ট এবং লক্ষ্যযুক্ত অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করেছে। প্রাথমিক অভিযানগুলো জেইতুন এবং জাবালিয়া অঞ্চলে শুরু হয়েছে।
এই সামরিক উত্তেজনা এমন এক সময়ে ঘটছে যখন যুদ্ধবিরতির আলোচনা নতুন করে গতি পেয়েছে। হামাস কর্তৃক প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতিতে প্রায় অর্ধেক জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং ২০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে। এছাড়াও গাজায় মানবিক সহায়তা বৃদ্ধির বিষয়টিও এতে অন্তর্ভুক্ত। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু-র অবস্থান হলো, যুদ্ধবিরতি চুক্তির আগে সকল জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে এবং হামাসকে সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করতে হবে। এই পরিস্থিতি অত্যন্ত পরিবর্তনশীল, যেখানে সামরিক পদক্ষেপ এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টা উভয়ই চলছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো গাজার ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘের মতে, ৭ অক্টোবর, ২০২৩ থেকে আজ পর্যন্ত ৬২,০০০ এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যা এই সংঘাতের ভয়াবহতা তুলে ধরে। এই খবরগুলো এমন এক সময়ে আসছে যখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে জার্মানির মতো দেশগুলো, ইসরায়েলের এই সামরিক পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং একে "উত্তেজনা" হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। তারা প্রশ্ন তুলেছে যে এই ধরনের অভিযান জিম্মিদের মুক্তি বা যুদ্ধবিরতিতে কীভাবে সহায়তা করবে।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের অভ্যন্তরেও এই অভিযানের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি হচ্ছে। জিম্মিদের পরিবার এবং প্রাক্তন সামরিক কর্মকর্তারা সরকারের যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করার নীতির সমালোচনা করছেন। তারা মনে করেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তি গ্রহণ করে জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা এবং যুদ্ধের অবসান ঘটানোই শ্রেয়। এই পরিস্থিতিতে, ইসরায়েলের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তা দেখার বিষয়, কারণ এটি কেবল গাজার মানবিক সংকটকেই প্রভাবিত করবে না, বরং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার উপরও গভীর প্রভাব ফেলবে।